আমার কাগজ ডেস্ক
সরকার পরিবর্তন না হলে একটি দল এবং তাদের একজন নেতা চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপক্রম হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
তিনি বলেছেন, বর্তমানে বিদেশি প্রেশার কাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো চেষ্টা করছে। এই সুযোগে সবাই যদি মিলেমিশে কিছু করতে পারি তাহলে দেশের মানুষ উদ্ধার হবে। না হলে যে অবস্থা চলছে তাতে সামনের দিকে দেশের মানুষের হাতে রাজনীতি থাকবে না, রাজনৈতিক দলও থাকবে না। একটি দল এবং তাদের একজন নেতা চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপক্রম হবে। যদি এভাবে নির্বাচন হয় এবং বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় আসে তাহলে এটাই বাস্তবায়ন হবে। এজন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য বড় ধরনের পরীক্ষা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সেখানে তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে জিএম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের কোনোরকম অধিকার নেই বললেই চলে। ভোটাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। মানুষের ভাত-কাপড়ের নিরাপত্তা নেই। সংবিধান অনুযায়ী মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সরকারের এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব, সেগুলোর ব্যাপারে কোনো ধরনের ব্যবস্থা করা হয়নি। দেশের মানুষকে যেকোনোভাবেই হোক মুক্ত করতে হবে।
বর্তমান বাজেট জনমুখী হয়নি দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাজেটের পর সাধারণ মানুষের দুরবস্থা বাড়বে। অর্থনৈতিক যে মন্দা চলছে এটা আরও বাড়বে। দেশের মানুষ অনিশ্চিত বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন গতি অন্যদিকে প্রতিদিন মানুষের আয় কমছে। কিন্তু বাজেটে সরকার এ বিষয়ে কোনোরকম পদক্ষেপ নেয়নি। মানুষকে বাঁচাতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা, সরকার তা দেয়নি। যতটুকু দিয়েছে তা যৎসামান্য। এর মধ্যে পেনশনের টাকার কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
এর আগে পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা থেকে দুপুরে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জিএম কাদের। সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসে পৌঁছালে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, মহানগরের সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের পাঁচ দিনের এই সফরে রংপুরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন। ঈদের তৃতীয় দিন (১ জুলাই) তার নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাটে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরের দিন রোববার (২ জুলাই) তিনি রংপুর হয়ে ঢাকায় ফিরে যাবেন।