বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে হত্যা মামলার এক আসামি আরেক আসামিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক আসামি।
রোববার ভোরে এ ঘটনায় হতাহতরা সবাই বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি বলে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক জানান।
নিহত ৬০ বছর বয়সী মো. মোতাহার বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের রফিজউদ্দিনের ছেলে। বরগুনার একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন তিনি।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১টার দিকে মোতাহারের মৃত্যু হয় বলে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক জানান।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের গৌরাঙ্গ মণ্ডলের ছেলে আহত অজিত মণ্ডল একটি চুরি মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আর অভিযোগের মুথে থাকা ২৫ বছর বয়সী তরিকুল ইসলাম পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে।
বরিশাল হাসপাতালে প্রিজন সেলে ‘আসামির হাতে’ আসামি খুন
ওসি বলেন, “পটুয়াখালীর একটি হত্যা মামলার আসামি তরিকুল মানসিক রোগী। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অপর দুই আসামি মোতাহার ও অজিতকে স্যালাইন রাখার স্টিলের স্ট্যান্ড দিয়ে পেটায় তরিকুল। পরে তাদের মধ্যে মোতাহারের মৃত্যু হয়।”
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের এ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এক নায়েক ও দুই কনস্টেবল প্রিজন সেলটির দায়িত্বে ছিলেন। তিন আসামি ওই সেলের একই কক্ষে ছিলেন; তাদের মধ্যে একজন মাসসিক রোগী। সকালে হঠাৎ ওই মানসিক রোগী, অপর দুই আসামিকে স্ট্যান্ড দিয়ে বেধরক পেটায়। এ সময় মোতাহারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর জখম হয়। অজিত আঘাত পেলেও তা গুরুতর নয়।
বরিশাল হাসপাতালে প্রিজন সেলে ‘আসামির হাতে’ আসামি খুন
তিনি বলেন, “ঘটনার সময় সেলের চাবি নিয়ে একজন বাহিরে নাস্তা করতে গিয়েছিলেন। তাই বাকিরা ঘটনার সময় ঢুকতে পারেনি।”
জানতে চাইলে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, “প্রিজন সেলে একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে আজ কিছু বলতে পারব না। ”
প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন এক আসামি মানসিক রোগী ছিলেন, তাকে কেন আলাদা রাখা হয়নি জানতে চাইলে কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্মা রায় বলেন, “কী ঘটেছে, তদন্ত না করে বলা যাবে না। তবে কারও দায়িত্বে অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”