খুলনা প্রতিনিধি
হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খুমেক হাসপাতাল সংলগ্ন বিপ্লব ফার্মেসির মালিক মাহমুদুর রহমান বিপ্লব ও আবিদ ফার্মেসীর কর্মচারী মীর বায়েজিদ।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজের সচিব মো. মনিরুজ্জামান বাদি হয়ে মামলা দায়েরের পর ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ। মনিরুজ্জামানের করা মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় ৫০ জন ওষুধের দোকানিকে আসামি করা হয়।
শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত সোমবার রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর। তিনি জানান, হামলায় তাদের ১৪/১৫ জন আহত হয়েছেন।
হামলাকারীদের গ্রেপ্তারসহ ৩ দফা দাবিতে ২য় দিনের মতো ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করেন খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে।
এদিকে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ দোকানিদের সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে খুলনা মেডিকেলের সামনে ওষুধের ৯০টি দোকান। দোকানিদের উপর হামলাকারী শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির খুলনা শাখা। সমিতির সহ-সভাপতি এস এম কবীর উদ্দিন বাবলু বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হামলায় তাঁদের ১০/১২ দোকান মালিক ও কর্মচারী আহত হয়েছেন।
এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল গত বুধবার রাতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে যান। তারা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী শিগগিরই হাসপাতালে মডেল ফার্মেসি চালু করা হবে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও হাসপাতালের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাউথ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাসপাতালের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গত সোমবার রাতে খুলনা মেডিকেলের সামনে বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে ওষুধ কিনতে যান মেডিকেলের এক শিক্ষার্থী। এ সময় ওষুধের দাম থেকে কমিশন বাদ দেওয়ার জন্য দোকানিকে অনুরোধ জানান ওই শিক্ষার্থী। এনিয়ে উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডার জেরে একপর্যায়ে ওষুধের দোকানিদের সঙ্গে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে।