
ফজলুল হক,সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
সোনাইমুড়ী উপজেলার একটি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। সম্প্রতি সময়ে সেখানে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে প্রশাসনের একটি পক্ষ এমনটা দাবি পরিবারটির।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, খাল খননের জন্য সোনাইমুড়ী রেল গেইট সংলগ্ন “সফিক উল্যাহ ভূঁইয়া মার্কেট” প্রতিষ্ঠানটিকে উচ্ছেদের জন্য বলা হয়েছে মর্মে গণমাধ্যমকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের দাবি প্রতিষ্ঠানটির মালিক সফিক উল্যাহ ভূঁইয়া প্রায় ৪০ দশক আগে সরকারের বৈধতা নিয়ে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন।
তিনি ১৯৬৭ সাল থেকে এ জমি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ব্যবহার করে আসছিলেন। সফিক উল্যাহ্ ভূঁইয়ার মৃত্যুর পর সময়ের পরিক্রমায় তার ওয়ারিশদের মধ্যে সেই সম্পদ বন্টন হয় এবং তারা এখনো বৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
সেখানে ব্যবসারত সেলিম ষ্টোরের কর্ণধার মো কামাল জানায় আমরা দীর্ঘদিন থেকে এখানে ব্যবসা করে আসছি। আমাদের বাবার সময় থেকে এই ব্যবসা। আমরা যতটুকু জানি সফিক উল্যাহ ভূঁইয়া তৎকালীন সময়েই সরকার থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে এখানে দোকান ঘর গড়ে তুলেছেন।
আরেক প্রবীণ মেডিসিন ব্যবসায়ী ডাক্তার শহীদুল ইসলাম জানান সফিক উল্যাহ্ ভূঁইয়া সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে বৈধ বন্দোবস্ত নিয়েই এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন। কালক্রমে আমরা এখানে ব্যবসা শুরু করি। আমরা এই ব্যবসায়ের উপরই জীবকা নির্বাহ করি। এই প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রায় অর্ধশত পরিবার নিয়মমাফিক ব্যবসা করতে না পারায় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হয়ে পড়বে।
সফিক উল্যাহ্ ভূঁইয়া ছেলে বাবলু ভূঁইয়া গণমাধম্যকে জানায়, আমার বাবা মরহুম সফিক উল্যাহ্ ভূঁইয়া সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ওনার জীবন দশায় ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সরকারের নিয়মানুযায়ী সেলামি প্রদান করে এসেছেন। জীবনের শেষ সময়ে তিনি স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করে যান। যা তৎকালীন তহশীলদার ও সহকারী কমিশনার ভূমি তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রেরণ করে। যার স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শাঃ-৮/খাজব/৫৭/৯৬(অংশ)/৪৩১ তারিখ ১১-০৬-১৯৯৭। পরর্বতীতে বেগমগঞ্জ উপজেলা ভেঙ্গে সোনাইমুড়ী উপজেলা হওয়া স্থায়ী বন্দোবস্তের প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়ে। বাবার মত্যুর পর ২০০৭ সালে উত্তরাধিকারীদের পক্ষে আমি পুনরায় স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করি। এই আবেদন তৎকালীন ইউএনও, এসিল্যান্ড ও জেলা ডিসির তদন্ত শেষে সচিবালয়ে মুলতবী রয়েছে। যার স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৮/খাজব/৫৭/৯৬(অংশ)/৫৩৮/১ তারিখ ০৫-১১-২০০৭। আমার বাবা মরহুম সফিক উল্যাহ্ ভূঁইয়া তৎকালীন সময় ২৮৫ সোনাইমুড়ী মৌজায় ১৪৪,১৪৫,১৪৬,১৬৭ দাগে মোট ৩৩ শতক অকৃষি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে। যা সরকারের নথীভুক্ত। প্রায় দেড় যুগের বেশি সময় থেকে বৈধভাবে সেলামি প্রদান করে দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্তের আবেদন চলমান থাকা অবস্থায় কোনো প্রকার লিখিত নোটিশ না করে আমাদেরকে বিভিন্ন মহল থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে। আমি মনে করি যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের স্থায়ী বন্দোবস্তের আবেদন নিষ্পত্তি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এমন হুমকি প্রদান প্রচলিত আইন বিরুদ্ধ। এমতাবস্থায় যেকোনো উচ্ছেদ, আইন ও প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী হওয়া উচিত।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দীর্ঘদিনের অধিকার রক্ষা এবং ন্যায্য তদন্তের মাধ্যমে তাদের ক্ষতি রোধ করা হবে এবং দীর্ঘকাল ধরে জমি ব্যবহার, খাজনার রশিদ পাওয়ার ইতিহাস থাকায় প্রশাসনিক ভাবে আমাদের গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত।এটা আমাদের মানবিক আবেদন প্রশাসনের প্রতি।