
আমার কাগজ প্রতিবেদক
চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি’কে সম্প্রতি, একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেফ্রি স্যাকস।
সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক স্যাকস বলেন, ৪৪ বছর ধরে চীনের উন্নতি তিনি স্বচক্ষে দেখছেন। চল্লিশ বছর ধরে তিনি চীনের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাই চীনের প্রতি তাঁর আস্থা এসেছে, সারাটা জীবন ধরে চীনের সাথে যোগাযোগের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। চীনের উন্নতি তখনকার প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাঁর এই আশাবাদ দৃঢ় বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পেশাদার বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
তিনি মনে করেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় চীন প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জন করেছে, যা কিছু আমেরিকানকে উদ্বিগ্ন করতে পারে। এই অনুভূতি থেকে সুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেছে নিয়েছে সংকোচনের পথ। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে সংকুচিত করতে পারবে না, এই ধারণা অত্যন্ত হাস্যকর। চীনের অর্থনৈতিক আকার বিশাল, বর্তমানে এটি বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। চীন একাধিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অগ্রভাগে রয়েছে, যার আছে চমত্কার উদ্ভাবনী পরিবেশ। এই সবকিছুই প্রমাণ করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নিজস্ব উদ্ভাবন শক্তি বৃদ্ধি করা এবং চীনের সাথে সহযোগিতা করা। আমাদের অবশ্যই সংকোচনের এই ভুল চিন্তাভাবনা পরিত্যাগ করতে হবে এবং এই ধরনের ভুল নীতি বন্ধ করতে হবে।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান শুল্কনীতির পক্ষে নন। তিনি মনে করেন যে এই শুল্ক নীতি ব্যর্থ হতে বাধ্য। সংরক্ষণবাদ উদ্ভাবন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সুরক্ষা বাধার আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে যায়। তারা হয়ত স্থানীয় বাজারে টিকে থাকতে পারে, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে সত্যিকারের প্রতিযোগিতামূলক হওয়া তাদের পক্ষে কঠিন।
অধ্যাপক স্যাকস আরও মনে করেন যে, ইউরোপের জন্য একটি সত্যিকারের স্বাধীন বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ৩০ বছর ধরে, ইউরোপ সবসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের বৈদেশিক নীতি ও নিরাপত্তা নীতিকে প্রভাবিত করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিমা যুদ্ধের সিদ্ধান্তও নির্ধারণ করে, যেখানে ইউরোপের কোনো বলার অধিকার নেই। ইউরোপকে অবশ্যই একতাবদ্ধ হতে হবে তবেই কিছু করতে পারবে। ইউরোপের মোট জনসংখ্যা ৪৫ কোটি, অর্থনৈতিক আকার ২০ ট্রিলিয়ন ডলার। ইউরোপ যদি একতাবদ্ধ হতে পারে, তাহলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক শক্তি হবে।
তিনি আরও মনে করেন যে, বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ একটি অসাধারণ এবং অনন্য উদ্যোগ। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই আন্তঃসংযোগ ধারণা বিশাল সুবিধা বয়ে আনতে পারে। চীন আন্তঃসংযোগ বাড়াতে জন্য বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের মাধ্যমে বিশাল প্রচেষ্টা করেছে। তিনি মনে করেন যে, ইউরোপের উচিত এই বিষয়ে চীনের সাথে সহযোগিতা করা। ইউরোপের ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ পরিকল্পনা এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ-এর হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করা উচিত, যৌথভাবে ২১ শতকের সিল্ক রোড পুনর্নির্মাণের জন্য।
সূত্র:স্বর্ণা-হাশিম-লিলি,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।