
আমার কাগজ প্রতিবেদক
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ গণমাধ্যমে ‘ভুল রক্ত প্রয়োগে গর্ভের শিশুর মৃত্যু, মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন’ সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বার শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগ করায় গর্ভের প্রায় ৯ মাস বয়সী শিশুর মৃত্যু এবং প্রসূতির জীবন সংকটে পড়া সংক্রান্ত অভিযোগের ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন মর্মে কমিশন মনে করে। তাছাড়া, নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ২০২২ সালে আলপনা ক্লিনিকটি সিলগালা করার পরও অদ্যাবধি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার বিষয়টি নাটোর জেলার স্বাস্থ্য সেবার চরম অব্যবস্থাপনার চিত্র প্রকাশ করে। এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
সংবাদ প্রতিবেদনের বরাতে সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, সাথী খাতুন (১৮) নামের এক অন্তঃসত্ত্বার শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগ করায় গর্ভের প্রায় ৯ মাস বয়সি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে গর্ভের মৃত শিশুকে বের করা হলেও জীবন সংকটে পড়েছেন ওই নারী। গুরুদাসপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তার চিকিৎসা চলছিল। ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে সাথী খাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর সকালেই নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। সাথী খাতুন গুরুদাসপুর উপজেলার সাবগাড়ি গ্রামের আব্দুস সালাম মণ্ডলের মেয়ে। হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী অবস্থায় সাথী খাতুন বলেন, আলপনা ক্লিনিকে রক্ত গ্রহণের পরপরই তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। দুই বছরের সংসারে এটিই ছিল তার প্রথম সন্তান। অথচ ভুল রক্ত প্রয়োগে তার গর্ভের সন্তানটি হত্যা করা হয়েছে। তিনিও জীবন সংকটে পড়েছেন। তিনি এর সঙ্গে জড়িতদের কঠিন শাস্তির দাবি করেছেন।
এ অবস্থায়, সিলগালা করার পরও কাদের মনিটরিংয়ের অভাবে অদ্যাবধি আলপনা ক্লিনিকটি চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে তা নিবিড় তদন্তপূর্বক এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা সহ অন্তঃসত্ত্বার শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগ করার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী আগামী ২৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণ করতে সিভিল সার্জন, নাটোর-কে বলা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে দায়েরকৃত মামলার তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি আগামী ২৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে পুলিশ সুপার, নাটোর-কে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসক, নাটোর বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।