
আমার কাগজ ডেস্ক
চীনের জাতীয় দিবস ও মধ্য-শরত উৎসবের ছুটির দিনগুলোয় গড়ে দৈনিক অভ্যন্তরীণ ও বহির্গামী যাত্রীর সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে এবং ১ থেকে ৬ অক্টোবর অভ্যন্তরীণ ও বহির্গামী যাত্রীদের সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আশা করা হচ্ছে। জাতীয় অভিবাসন প্রশাসনের (সোমবার) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যান অনুসারে, শাংহাই ফুতং, কুয়াংচৌ বাইইউন ও বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ প্রধান বিমানবন্দরগুলোয় অভ্যন্তরীণ ও বহির্গামী যাত্রীদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে; গড়ে দৈনিক অভ্যন্তরীণ ও বহির্গামী যাত্রীর সংখ্যা যথাক্রমে ১০.১ লাখ, ৫১ হাজার, ও ৪৬ হাজারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, কিছু জনপ্রিয় শহর, যেমন শাংহাই, ছেংতং, বেইজিং, কুয়াংচৌ, সি’আন, হাংচৌ, নানচিং, ছংছিংয়ে পর্যটকদের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি হবে। বহির্গামী পর্যটনের ক্ষেত্রে, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় যাওয়া চীনা পর্যটকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
চীন সরকার ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন ভিসা-মুক্ত নীতিমালা গ্রহণ করেছে। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীন ৪৭টি দেশের জন্য একতরফা ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়ন করেছে এবং ২৯টি দেশের সাথে সম্পূর্ণ পারস্পরিক ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়ন করেছে। আর ৫৫টি দেশের জন্য একটি ট্রানজিট ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়িত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বন্দরের সংখ্যা ৬০টিতে উন্নীত হয়েছে এবং থাকার সময়কাল সমানভাবে ২৪০ ঘন্টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা বিদেশীদের চীনে ভ্রমণকে ব্যাপকভাবে সহজতর করেছে।
এই বছরের প্রথম আট মাসে দেশে প্রবেশকারী ও প্রস্থানকারী বিদেশীর সংখ্যা ৫১.২৬৮ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭.৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ১৫.৮৯ মিলিয়ন বিদেশী ভিসা ছাড়াই চীনে এসেছেন, যা দেশে প্রবেশকারী মোট বিদেশীর ৬২.১ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫২.১% বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে চীনা দলগত পর্যটকদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশ নীতি বাস্তবায়ন করেছে। ১৫ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার জন্য চীনের ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়িত হয়। এতে ছুটির দিনে চীনে ভ্রমণকারী রাশিয়ান পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এবারের ছুটিতে রুশ পর্যটকদের অভ্যন্তরীণ বুকিং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পেমেন্ট ক্ষেত্রে ইউনিয়নপে, আলিপে উইচ্যাট পে বর্তমানে সারা দেশের ৯৫ শতাংশেরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক এলাকা ও দর্শনীয় স্থানে চালু আছে। প্রস্থান কর ফেরতের ক্ষেত্রে গত অগাষ্ট পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ প্রস্থান কর ফেরত দোকানের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে কর-ফেরতযোগ্য পণ্যের বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শপিং মল ও দর্শনীয় স্থানগুলোয় চীনা-ইংরেজি দ্বিভাষিক পরিষেবা উন্নত হয়েছে এবং টিকিট সংরক্ষণের ইন্টারফেস আরও উন্নত হয়েছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন শিল্পও এক অপূরণীয় ভূমিকা পালন করে। পর্যটকদের গন্তব্যস্থলে আবাসন, খাদ্য সরবরাহ, পরিবহন, কেনাকাটা, ইত্যাদির ব্যয় সরাসরি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চালিত করে। অন্যদিকে, ভ্রমণ পরিষেবায় বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে এবং পরিষেবা বাণিজ্যের উচ্চমানের উন্নয়নে অভ্যন্তরীণ ভোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চীনে বিদেশী পর্যটকদের বিভিন্ন ধরণের ভোগ সরাসরি পরিষেবা বাণিজ্যের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে পারে; একই সাথে দেশীয় পরিষেবা শিল্পকে আরও ভালো পরিষেবা প্রদানে বাধ্য করতে পারে। এটি চীন ও বাইরের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সুবিধা, জয়-জয় সহযোগিতা এবং সাধারণ উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও প্রাণশক্তি সঞ্চার করছে।
সূত্র:ছাই-আলিম-ওয়াং হাইমান,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।