
আমার কাগজ প্রতিবেদক
উচ্চ সুদের পরও ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ বৃদ্ধি পাচ্ছে না। জুন শেষে দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৭.৭৭ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে, যা আগের মাসের সঙ্গে প্রায় সমান। এপ্রিল ও মার্চ মাসে এই হার যথাক্রমে ৮.২১ ও ৮.৫১ শতাংশ ছিল।
বর্তমানে অনেক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ৯–১১ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে, আবার যে ব্যাংকগুলো তারল্যসংকটে রয়েছে তারা ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিয়েও আমানত সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবু তেমন সাড়া মিলছে না।
ব্যাংকার ও অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মাস শেষে মানুষের হাতে সঞ্চয় করার মতো অতিরিক্ত টাকা থাকে না। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরগতি ও নতুন বিনিয়োগের অভাবও মূল কারণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুনে মোট ব্যাংক আমানত হয়েছে ১৮ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৭৭ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন জানান, বর্তমান প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল সহায়ক হচ্ছে রেমিটেন্সের ভালো প্রবাহ। তিনি বলেন, নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমে যাচ্ছে, যা কর্মসংস্থানে প্রভাব ফেলছে এবং বেকারত্ব বাড়াচ্ছে।
জুনে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি ২৫.৪১ শতাংশ কমেছে। এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান বলেন, মূল্যস্ফীতি এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের ধীরগতি মিলিতভাবে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমিয়েছে।
বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৬.৪৯ শতাংশে, যা উচ্চ সুদ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকোচনশীল মুদ্রানীতির কারণে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর উল্লেখ করেন, মূলত ডলার পাচারের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে টাকা চলে যাওয়ায় আমানতে উচ্চ সুদ দেওয়ার পরও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে না।