
পানিতে তলিয়ে আছে ফেনী শহর
ফেনী প্রতিনিধি
ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে স্মরণকালের বন্যার কবলে ফেনী ও নোয়াখালীসহ দেশের আটটি জেলা। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনস্থল দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে থাকায় একের পর এক জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে ফেনীর বাসিন্দারা। এছাড়া লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বন্যাকবলিত এসব জেলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টেলিযোগযোগ সেবা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। অন্যদিকে প্রশাসনের সমন্বয় না থাকায় জেলাজুড়ে নারকীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল দূরের কথা, খোদ জেলা শহরেই আক্রান্ত মানুষেরা অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিনের বন্যায় জেলাশহরের পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশের বাড়িঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। কারো ঘরে হাঁটু পানি, কারো কোমর কিংবা আরো বেশি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সকলে আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়ির ছাদ কিংবা অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। সেসব বানভাসীদের দেখার কেউ নেই। এরই মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে ঘরে ঘরে হাহাকার দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎবিহীন থাকায় সামান্য মোমবাতি কিংবা দেয়াশলাইয়ের ব্যবস্থাও নেই অনেকের। এমনকি অনেকের খাদ্যাভাবও দেখা দিয়েছে। চরম অভাব সুপেয় পানির। শহরের প্রতিটি এলাকায় এ দৃশ্যের দেখা মিলেছে। এ অবস্থায় মানবিক বিপর্যয় এখন চরমে। বিশেষ করে বারাহিপুর, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, গাজী ক্রস রোড, একাডেমি রোড, আদালত পাড়া, শান্তি রোড, ডাক্তার পাড়া, সদর হাসপাতাল এলাকার অবস্থা নাজুক।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার কার্যক্রম এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে তার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। অভিযোগ রয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী দূরের কথা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। এমনকি গত কয়েকদিনে সংশ্লিষ্ট কারো দেখাও মিলেনি। অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে দুর্গতরা। তাদের কাছে এ মুহূর্তে খাদ্য-পানীয়সহ নিত্য ব্যবহার্য জিনিস পৌঁছানো জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র্যাবের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, ফেনী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পিবিআই পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন প্রমুখের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ এবং খুদে বার্তায় পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে অবহিত করা হয়েছে।