আমার কাগজ প্রতিবেদক
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ দুই দিনের সফরে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকালে ঢাকায় আসছেন। এটি রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। শীর্ষ নেতৃত্ব তো নয়ই, কোনো ক্যাবিনেট সদস্যও বাংলাদেশ সফর করেননি!
বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ঘিরে নানা হিসাবনিকাশ চলছে। তার সফরকে পশ্চিমা দেশগুলো সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ঢাকা-মস্কোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করতেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসছেন। এ সফরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ইউক্রেন পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ইস্যু প্রাধান্য পাবে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবসহ গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বিকালে তিনি নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দুই দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। ভারতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনে লাভরভ যোগ দেবেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর শত শত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়াকে প্রবল চাপের মুখে ফেলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ অবস্থার মধ্যে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জাম, খাদ্যশস্যসহ নানা পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। রাশিয়ার জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম আনতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে মস্কোর পক্ষ থেকে বিষয়টি উত্থাপন করা হতে পারে। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বৈশ্বিক রাজনীতিতে পশ্চিমাদের চাপের মুখে থাকার ইস্যুতে বাংলাদেশের সক্রিয় সমর্থন চাইতে পারেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ফেসবুক বার্তায় জানান, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে রাশিয়ার অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সের্গেই লাভরভের ঢাকা সফরকালে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতবিনিময়ের সম্ভাবনাও রয়েছে।