
মোঃ ফারুক
“এসো মিলি প্রাণে প্রাণে বন্ধুত্বের টানে” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বন্ধুত্ব বন্ধন আর আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী নাজিরুল ইসলাম কলেজিয়েট স্কুলের এসএসসি ২০০১ ব্যাচের মিলনমেলা ও শিক্ষক সম্মাননা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়।
দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (৯ জুন) এসএসসি-২০০১ ব্যাচের মিলনমেলার এ আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টায় স্কুল মাঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মিলনমেলার সমাপ্তি হয়। ২০০১ ব্যাচের স্কুলের প্রিয় বন্ধুদের সাথে মিলিত হতে পেরে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন তারা।
স্বাগত বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন নাজিরুল ইসলাম কলেজিয়েট স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল বাশার খান সুমন।
সভাপতিত্ব করেন নাজিরুল ইসলাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিপদ দাস নান্টু।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ করা হয়, যাঁরা বেচে আছেন তাঁদের সুস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। উপস্থিত শিক্ষকদের ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
দিনভর এ মিলনমেলায় শিক্ষক সম্মাননা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, আড্ডা, পরিচিতি সভা, আপ্যায়ন এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল এক অভূতপূর্ব প্রাণের মিলনমেলা।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সম্মাননাপ্রাপ্ত উপস্থিত শিক্ষকগণ বলেন, অত্র বিদ্যালয়ে ৩৬ বছরের শিক্ষকতা জীবনের এ ধরনের আয়োজন আগে কখনো হয়নি। শিক্ষকগণ বলেন, আমাদের তোমরা মনে রেখেছো এজন্য আমরা গর্ববোধ করছি। তোমাদের এ চমৎকার আয়োজন আমাদের আজীবন মনে থাকবো।
মিলনমেলা অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন এসএসসি-২০০১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ আলমগীর হোসেন। সার্বিকভাবে পরিচালনায় ছিলেন জাকারিয়া রহমান, বখতিয়ার হোসেন সজীব, নূরুজ্জামান, হুসাইন মোহাম্মদ তানভীর, রফিকুল ইসলাম, ব্যাংকার বাউল জাহেদুল ইসলাম, ফাহমিদা আক্তার লিজা।
এসএসসি ব্যাচের বন্ধুদের মধ্যে স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে চমৎকার বক্তব্য রাখেন হুসাইন মোহাম্মদ তানভীর এবং রফিকুল ইসলাম।
এই বর্ণাঢ্য আয়োজনে যোগদানকৃত সকল বন্ধু এমন সুন্দর আয়োজনের জন্য যারা এ আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং সকল কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আগামীতে যেন আরও সুন্দরভাবে এই ধারা অব্যাহত রাখা যায় সেই মানসিকতা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
২০০১ থেকে এ পর্যন্ত কেটে গেছে ২৪ বছর। এই দীর্ঘসময়ে এসব শিক্ষার্থীদের একেকজন নানা পেশায় চলে গেছেন। কেউ দেশে আছেন, কেউ বিদেশ আছেন। তবে যাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়, তারা উৎসাহের সাথে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
উপস্থিত বন্ধুদের মাঝে অনেকেই বলেন, ২০০১ ব্যাচের সকল বন্ধুদের একত্রে পেয়েছি এটা এবারের ঈদ উদযাপনের শ্রেষ্ঠ উপহার। জীবন বাস্তবতার সময়ের প্রয়োজনে আমরা প্রত্যেকে বিভিন্ন দিকে ব্যস্ত থাকি। সবার সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ খুব একটা আসে না। তাই সবার সান্নিধ্য পেয়ে ভালো লাগছে। আশা করি আগামীতেও আমরা এই পুনর্মিলনীর ধারা অব্যহত রাখেবো।
আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক পর্বে শিল্পী বৈশাখী বিশ্বাস ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বাউল জাহিদুল, নুরুজ্জামানসহ অনেকে গান পরিবেশন করেন।