
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কারণে লঞ্চঘাটের জেটি নদীতে বিলীন হয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় যাতায়াতকারী লঞ্চ যাত্রীরা।
লঞ্চের মাস্টার ও সুকানিদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষ আগাম কোনো প্রস্তুতি নেয় না। এবারও যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিকল্প হিসেবে আপাতত পাটুরিয়ার দুই নম্বর ফেরিঘাটে লঞ্চঘাটটি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার পান্না লাল নন্দী বলেন, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা দুইটার দিকে তীব্র স্রোতে লঞ্চঘাটের জেটির নিচের মাটি সরে যায়। এর পরপরই একটি জেটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে নদীতে। অপর জেটিও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে। সেটিতেও পানি উঠে গেছে। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে লঞ্চঘাটের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বাধ্য হয়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্ভোগে পড়েছেন পারাপার হতে আসা যাত্রীরা। পরে গতকাল বিকেলে লঞ্চগুলোকে পাটুরিয়া ২ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনে রাখা হয়। সেখানে কোনোরকমে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠানামা করানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ যাত্রী ফেরিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হচ্ছেন। এতে লঞ্চের যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় তাদের আয় কমে গেছে। যাত্রীরাও ভোগান্তির পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে চলাচল করা একটি লঞ্চের সুকানি কাজী শফিক বলেন, যে জায়গায় ঘাটটি ছিলো সেখান দিয়েই যাত্রীরা যাতায়াত করতো। এখন যাত্রীদেরও ভোগান্তি হচ্ছে, আমাদেরও ভোগান্তি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে লঞ্চঘাটটিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন সেখানে এসে পরিদর্শন করেছেন। বালুভর্তি ব্যাগ ফেললে ঘাটটি ভাঙতো না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা নদীবন্দরের উপপরিচালক সেলিম শেখ বলেন, গতকাল দুপুরে প্রবল স্রোতের কারণে লঞ্চঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাত্রী পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দ্রুত লঞ্চগুলো ২ নম্বর ফেরিঘাটে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। লঞ্চঘাটটি অন্যত্র কীভাবে স্থাপন করা যায় এবং লঞ্চঘাটটি কীভাবে টিকিয়ে রাখা যায়, তা নিয়ে প্রাথমিক কাজ চলছে।