লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে বাঁশের বেড়া দিয়ে নির্মিত একটি নতুন ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ৭ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাদীর আইনজীবী রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্না বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চন্দ্রগঞ্জ আদালতে ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী মহিবুল মান্নান ইমরান এ মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাদীর আইনজীবী রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্না বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক আমলে নিয়েছেন। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ডিবির ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার বাদী ইমরান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পূর্ব বশিকপুর গ্রামের মনির উদ্দিন মিয়াজি বাড়ির মৃত মজিবুল মান্নানের ছেলে। ঢাকায় তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- পূর্ব বশিকপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির মো. নুরনবী, তার ভাই নুরুল হুদা, ভাতিজা ইয়াছিন আরাফাত রাসেল, স্ত্রী নেহার বেগম, ভাবি রহিমা বেগম, স্বজন পারুলি আক্তার ও সাথি আক্তার।
এজাহার সূত্র জানায়, বাদী ও বিবাদিদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। অভিযুক্ত নুরনবী জাল দলিল সৃজন পাশ্ববর্তী মানুষের জমি নিজেরে নাম ও স্বজনদের নামে করে নেন। বাদী ইমরানদেরও ৩০ শতাংশ জমি জাল দলিল করে নিজেদের বলে দাবি করেন। এনিয়ে ইমরান আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২১ মে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্তে জাল দলিল সৃজনের সত্যতা পাওয়ায় আদালত নুরনবীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। এদিকে ইমরান তাদের জমিতে একটি ঘর করে। জমিসহ ঘরটি তদারকির জন্য আবদুল আজিজ নামে এক ব্যক্তিকে দায়িত্বে রাখা হয়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) ভোরে অভিযুক্তরা ওই ঘরটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। জমির চারপাশে দেয়া খুঁটিও ভেঙে পেলে অভিযুক্তরা।
বাদী মহিবুল মান্নান ইমরান বলেন, আমার জমিতে থাকা ঘরটি নুরনবীসহ অভিযুক্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে আদালত প্রাঙ্গনেই নুরনবী আমাকে হত্যার হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে প্রধান অভিযুক্ত মো. নুরনবীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তবে অপর অভিযুক্ত নুরুল হুদা বলেন, আমরা কেউই ঘরে আগুন দিইনি। বিরোধপূর্ণ জমিতে ইমরান লোক দিয়ে রাতের অন্ধকারে ঘরটি নির্মাণ করে। আবার তারাই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। জমিটি আমাদের। ইমরান মামলা করে আমাদেরকে হয়রানি করছে।
আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাদাত হোসেন টিটোকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম বলেন, আগুন দেয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল গিয়েছি। ইমরান ও নুরনবী উভয়পক্ষই জমিটি দাবি করছে। তবে আদালত থেকে ইমরানদের পক্ষে একটি রায় এসেছে। পরে আবার আদালত নুরনবীসহ আমাকেও তলব করে। আমি আদালতে গেলেও নুরনবী আদালতে যায়নি।