
সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। ছবি : সংগৃহীত
আমার কাগজ প্রতিবেদক
রাজধানীর কাফরুল থানার হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে। পাশাপাশি তাকে কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসা ও ডিভিশনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে কাফরুল থানায় দায়ের করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয় কামাল আহমেদ মজুমদারকে। আদালতে ইকরাম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হারুন অর রশিদ মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়ার পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
এসময় আসামির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন।
যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইনের আদালত চিকিৎসা ও ডিভিশন সহ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে কাফরুল থানা পুলিশ। পরদিন ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ইকরাম হত্যা মামলায় তাকে হাজির করে পুলিশ।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা যায়, গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ। সেখানে আগে থেকেই আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী অবস্থান নেয়। এ সময় দলটির নেতাকর্মীদের হামলায় অনেকে আহত হন। একপর্যায়ে হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হন ইকরাম। গুলিটি তার মাথা ভেদ করে চোখ দিয়ে বেরিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। মাথায় অস্ত্রোপচার করা হলেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেনি। পরে গত ১৪ আগস্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা ইকরাম।
তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের এমবিএ’র শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ ঘটনায় গত সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য প্রতিমন্ত্রী এম এ আরাফাত, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন-উর-রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৭৩ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা।
এছাড়া এদিন সকালে নবাবগঞ্জ থানার বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন ঢাকা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শুনানি শেষে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।