আমাদের কাগজ প্রতিবেদক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের কৃতিত্ব দাবি করলেও দেশে ডিজিটাল সেবার অবস্থা শোচনীয়। তারা সাইবার জগতে মানুষের স্বাভাবিক অধিকার অবশিষ্ট আছে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেওয়ার গভীর চক্রান্ত করছে।’
আজ রোববার বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘ইন্টারনেট শাটডাউনসহ সকল ডিজিটাল নির্যাতন’র প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি মিডিয়া সেল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নাগরিকদের সেবা প্রদান এবং তাদের অধিকারকে সংরক্ষণ করার জন্য দেশে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। তেমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিচালনা এবং সেবার মান দেখভাল করা। কিন্তু জনগণের টাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানকেই বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের আরেকটি আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জনগণকে, কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মত প্রকাশের অধিকারকে।’
লিখিত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশ-বিদেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তির সহযোগিতায় বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আজ জনগণের স্বস্তস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার পর্বে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে। এতদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড গুম-খুন, জেল-জুলুম, নির্যাতন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে দমন করার অপচেষ্টা করেছে। তাদের সমস্ত অপচেষ্টাই প্রায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রাম ও ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনের ওসব বিভিন্ন তথ্য প্রতিনিয়ত আপনাদের পাশাপাশি বিএনপি মিডিয়া সেল সাধ্যমতো উন্মোচন করে আসছে। আন্দোলন সংগ্রামের এই তথ্যসমূহের অবাধ প্রবাহকে ক্ষমতাসীন সরকার ভয় পায়। ইতিমধ্যেই সে কারণে অনির্বাচিত অবৈধ পার্লামেন্টে তারা তৈরি করেছে গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট (ডিএসএ)।’
‘এই গণবিরোধী আইনের বলে ইতিমধ্যেই শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নয়, মুক্তমনা অনেক সাংবাদিক ও স্বাধীন নাগরিকরাও শিকার হয়েছেন মিথ্যা মামলার। এত কিছুর পরেও ক্ষমতাসীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভীত হয়ে প্রয়োগ করছে নতুন ডিজিটাল অস্ত্র ইন্টারনেট-শাটডাউ ‘, বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্যাতনকারী পুলিশ কেড়ে নিচ্ছে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত ডিভাইস মোবাইল ফোন। তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম দমনে নাগরিকদের ডিজিটাল অধিকার হরণে তৎপর।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে এই অবৈধ সরকার কখনো স্মার্ট বাংলাদেশের নামে সকল রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে নাগরিকদের সাইবার জগতের সকল সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে তাদেরই অযোগ্যতা এবং চরম অদক্ষতার দরুন প্রায় পাঁচ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে যা বিদেশের একটি গণমাধ্যমের সূত্রে আমরা সবাই জানতে পেরেছি। তার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা এই সরকারের ডিজিটাল অদক্ষতাকেই শুধু প্রমাণ করেনি, ডিজিটাল প্রতারণার সন্দেহের বীজও বপন করেছে।’