আমার কাগজ ডেস্ক
গাজার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের আল কুদস হাসপাতাল অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছে হাসপাতালটির ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে বেশ কিছু রোগী রয়েছে, এছাড়া রোগী রয়েছে শিশু বিভাগের ইনকিউবিটরে। তাছাড়া প্রায় ১৪ হাজার বেসামরিক লোক হাসপাতাল এলাকায় ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে অবস্থান করছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
এদিকে গতকাল রোববার হাসপাতাল এলাকায় দিনভর বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
গাজায় নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণে হাজার হাজার মানুষ পণ্যের গুদামগুলো থেকে মালামাল নিয়ে যাওয়ার পর আরও দশটি ট্রাককে সাহায্যবাহী পণ্য নিয়ে মিসর থেকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলায় এক হাজার ৪০০ লোককে হত্যার পর থেকেই গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ওই হামলায় হামাস ২৩০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে।
এদিকে, গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক বোমাবর্ষণে আট হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজার হাসপাতালগুলোতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে অন্যতম প্রসিদ্ধ আল কুদস হাসপাতাল এলাকায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আল কুদস হাসপাতাল খালি করার নির্দেশ দেওয়ার পর এখনো সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে চিকিৎসাধীন কয়েকশত রোগীকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ প্রায় অসম্ভব।
নাম উল্লেখ না করে আল কুদস হাসপাতালের একজন ডাক্তার বিবিসিকে এক বার্তায় জানান, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ইসরায়েল বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। হাসপাতালের পেছন দিকে চালানো হামলায় সবাই বিশেষ করে শিশুরা ভীষণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
বিবিসিকে পাঠানো এক ভয়েস মেসেজে গাজার একজন বাসিন্দা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী দুটি আবাসিক ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে আর আরেকটি ভবনে বোমা হামলা শুরু হয়েছে।
এদিকে, আল কুদস হাসপাতালের ভেতর থেকে নেওয়া একটি ফুটেজে দেখা যায় সেখানকার কক্ষগুলো ধ্বংসাবশেষে পূর্ণ হয়ে আছে আর জানালাগুলো উড়ে গেছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম খান অতিসম্প্রতি রাফা ক্রসিং থেকে ফিরে এসে বলেছেন, গাজায় মানবিক সাহায্যবাহী পণ্যের সরবরাহে বাধা দেওয়া যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি মনে করেন জীবনধারনের জন্য গাজায় প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা উচিত ইসরায়েলের।
করিম খান বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনের কাছে খাদ্য ও পানি অবশ্যই পৌঁছানো উচিত। আমি দেখেছি মানবিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলো মালামাল নিয়ে মিসরে অবস্থান করছে, যেখানে ওই পণ্যগুলো কারো দরকার নেই। সেগুলো আটকে আছে আহত শরীর আর ক্ষুধার্ত মুখের মানুষগুলো থেকে অনেক দূরে। এই সহায়তা সামগ্রীগুলো যত দ্রুত সম্ভব গাজায় পাঠানো উচিত।’