
আমার কাগজ প্রতিনিধি
সাধারণত উষ্ণ লবণ পানি ঠান্ডা ও কাশির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর বাইরেও অনেক উপকারিতা রয়েছে লবণ-পানির, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। শরীরে তরলের কার্যকারিতা ও ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য অল্প পরিমাণে সোডিয়াম বা লবণের প্রয়োজন হয়।
পানিতে লবণ মিশিয়ে পান করলে হাইড্রেশন, ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য ও হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লবণ-পানি। পানীয়টির অন্যান্য উপকারিতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানকারী ওয়েবসাইট হেলথশটস। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
১. রিহাইড্রেশন ও ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য: যেকোনো ধরনের পানি পান করলে তা আপনাকে হাইড্রেটেড থাকতে সহায়তা করে। আর লবণ-পানি পান করলে সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। জেনারেল ফিজিশিয়ান ডা. সুমল রত্না এ ব্যাপারে বলেন, সর্বোচ্চভাবে কাজের জন্য মানবদেহের সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামসহ ইলেক্ট্রোলাইটের সুনির্দিষ্ট ভারসাম্য প্রয়োজন। এ কারণে পরিমিত পরিমাণে লবণাক্ত পানি পান করলে শরীরিক কার্যকলাপে ও গরমের সময় অসুস্থতার প্রবণতা কমে। এ পানি পানে পেশী, স্নায়ু ও শারীরিক প্রক্রিয়াকরণ কার্যকরভাবে কাজ করে।
২. হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে: লবণ পানি পানের সবচেয়ে বড় উপকার হচ্ছে, এটি পরিমিত পরিমাণে পান করলে হজমশক্তি উন্নত হয়। জার্নাল অব অল্টারনেটিভ অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিনে ২০১০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, লবণ-পানি মলত্যাগে সাহায্য করে। এটি হজমে তরলের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে, পাকস্থলীর খাদ্য ভাঙতে সহায়তা করে এবং পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধি করে।
৩. ডিটক্সিফিকেশন: পানীয় পানিতে লবণ মেশালে আরও একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এতে ওই পানীয় বিষমুক্ত হয়। লবণ-পানি পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণ হয়। আবার কিডনি ও লিভারকে সক্রিয় করতে পারে, যা শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে।
৪. ত্বকের স্বাস্থ্য: লবণ-পানি পান করলে ত্বকের স্বাস্ব্যও ভালো থাকে। টপিক্যালি প্রয়োগে লবণ-পানি ত্বককে এক্সফোলিয়েট ও পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে ব্রণ, সোরিয়াসিস ও একজিমার লক্ষণগুলো অনেকটা কমায়। এছাড়া লবণ-পানি পান করলে শরীরের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখা, প্রদাহ কমানো ও বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে ও ত্বক স্বাস্থ্যকর করতে অবদান রাখে।
৫. মানসিক চাপ কমানো: লবণ-পানি পানের উপকারিতা সবারই কম-বেশি জানা আছে। কিন্তু জানেন কী, এটি মানসিক চাপ কমায়। ডা. সুমল রত্না বলেন, লবণ-পানিতে থাকা খনিজ পদার্থ যেমন- ম্যাগনেশিয়াম স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। যা আপনাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়তা করে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করে।