
আমার কাগজ প্রতিবেদক
ওএসডি হচ্ছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে তাদেরকে ওএসডি করে যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
জানা যায়, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। সরকার পরিবর্তনের পর ১৪ আগস্ট তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি এর আগে ছিলেন সচিব পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য। তার আগে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে, আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তা হিসেবে বিগত সরকারের পুরো শাসনামলে তিনি একের এক পদোন্নতি ও গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়েছেন।
আওয়ামী ঘরানার আরেক কর্মকর্তা হলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে তিনি এ পদে আসীন রয়েছেন। সরকার পরিবর্তনের পরও তার ক্ষমতার হেরফের হয়নি।
জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনপ্রশাসন কার্যত আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী আমলাদের নিয়ন্ত্রণে। বিগত ১৮ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বঞ্চিতদের মূল্যায়নের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেখানেও বঞ্চনার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সর্বশেষ ১৯৪ জন উপসচিবকে যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি নিয়েও সমালোচনা চলছে। সেখানেও আওয়ামী সুবিধাভোগীদের আধিক্য দেখা গেছে।
উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে, বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদের কারণে কার্যত সারাদেশে পতিত ফ্যাসিবাদ সমর্থিতরা পুনর্বাসিত হচ্ছে। সরকারের নানা কর্মকান্ড কৌশলে তারা ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। সচিবালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছে সহসাই পৌঁছে যাচ্ছে। বিগত বড় বড় দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ফাইলপত্র সরিয়ে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে গত বছরের ৫ আগস্ট। এর তিনদিন পরই যাত্রা শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকারের। এরপর সাড়ে সাত মাস অতিবাহিত হলেও কোথাও স্থিরতা আসেনি। বরং দেশে অন্তর্ঘাতমূলক পরিস্থিতি তৈরিতে চলছে নানা অপতৎপরতা। ফ্যাসিস্টের সহযোগীরা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থেকেই এসব অপতৎপরতায় ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এসব কর্মকর্তারাই একতরফা নির্বাচনের কুশীলব ছিলেন। একই সঙ্গে ফ্যাসিস্টের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে ছিলেন সদা তৎপর। বিনিময়ে নিজেরা হয়েছেন সম্পদশালী। জুলাই বিপ্লবের পরও তাদের অবস্থার নড়বড়ে হয়নি। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ফ্যাসিস্টের সহযোগীদের অপসারণের দাবি ওঠলেও সরকার এ ব্যাপারে নির্বিকার। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠেছিল ফ্যাসিস্টের সহযোগীদের খুঁটির জোর কোথায়?