
আমার কাগজ ডেস্ক
তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় পদদলিত হয়ে অন্তত ৩৯ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক সমাবেশে। নিহতদের মধ্যে ৮ শিশু ও ১৬ নারী রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধ্যায় ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ নামের জনসভায়, যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন।
অভিনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া বিজয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে; আমি অসহনীয়, ভাষায় বর্ণনা করা যায় না এমন যন্ত্রণা ও শোকে কাতর। কারুরে প্রাণ হারানো আমার প্রিয় ভাই-বোনদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
পুলিশ জানায়, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়েছিল। আনুমানিক ৩০ হাজার লোক সমাগমের অনুমতি থাকলেও স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বিজয় বক্তব্য বন্ধ করতে বাধ্য হন। ভিডিওতে দেখা গেছে, তাঁকে পুলিশের সহায়তা চাইতে হয়েছে।
তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্টালিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহতদের প্রত্যেককে ১ লাখ রুপি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে পদদলনের কারণ অনুসন্ধানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণা জগদেশনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তিনি জানান, ৪৪ জন চিকিৎসককে কারুরে পাঠানো হয়েছে আহতদের চিকিৎসায়।
একজন আইনপ্রণেতা সেন্টিল বালাজি জানান, অন্তত ৫৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি রাজ্যের জন্য একটি বেদনাদায়ক দিন, এই বিপর্যয়ের ক্ষত সহজে কাটবে না।”
গত বছরও বিজয়ের প্রথম রাজনৈতিক সমাবেশে অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল। পুলিশের আরোপিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তাঁর সমাবেশগুলোতে বিপুল জনসমাগম স্থানীয় অবকাঠামোকে বারবার বিপর্যস্ত করছে।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ অন্যরা।
নরেন্দ্র মোদি এক্সে লিখেছেন, “কারুরে রাজনৈতিক সমাবেশে ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সর্বশেষ আপডেটে ৩৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, থালাপতি বিজয় জনসভার মঞ্চে আসার পর তাকে কাছ থেকে দেখতে গিয়ে মঞ্চের ব্যারিকেডের দিকে চলে আসেন মানুষ। ওই সময় দমবন্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অনেকে জ্ঞান হারান। এরপরই পদদলনের ঘটনা ঘটে।
নিহতের সংখ্যা ৩৯ থেকে বেড়ে আরও অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অপর সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, থালাপতি বিজয়ের গতকালের জনসভায় যে সময় আসার কথা ছিল তার সাত ঘণ্টা পর তিনি মঞ্চে উপস্থিত হন। তার দেরির কারণে মানুষের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। একটা সময় সেখানে মানুষের মধ্যে গাদাগাদি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এরপরই ঘটে যায় ভয়াবহ এ ঘটনা।