আমার কাগজ ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে নারী কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক’। ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য দেওয়ায় এ দাবি করেছে সংগঠনটি।
বুধবার রাতে সংগঠনের সভাপতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণায়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং মহাসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এমন দাবি করা হয়েছে। তারা বলছেন, এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে একদিকে মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীরা তাদের সম্মান ও মনোবল সমুন্নত রেখে পেশাদারিত্বের সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনে তৎপর থাকবে, পাশাপাশি এ ধরনের নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন যেকোনো ব্যক্তি নারীর প্রতি সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল আচরণ করতে সচেতন হবেন।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গত ১৯ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাববুল হোসেন উন্মুক্ত জনসভায় ভোলাহাট ইউএনও উম্মে তাবাসসুমের উদ্দেশে অপেশাদার এবং অশোভন বক্তব্য প্রদান করেন। তার এ অশালীন বক্তব্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্কের সকল সদস্য সংক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। কারণ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীগণের সমন্বয়েই সরকারি সকল কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হয়।
সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হয়ে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীবৃন্দ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, নির্বাচন ও পরীক্ষা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ উন্নয়নমূলক বহুবিধ কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে, নারী কর্মচারীগণ তাদের দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার সঙ্গে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।
সরকারি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একজন ইউএনওকে মানহানিকর অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদর্শন করায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়ে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে। রাববুল হোসেন একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে যে সকল উক্তি করেছেন তা অশোভন এবং অভদ্রজনোচিত। তাছাড়া তিনি একজন নারীর প্রতি যে ধরনের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন তা বাঙালি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিও চরম অবমাননাকর। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী কর্মচারীর প্রতি উক্ত জনপ্রতিনিধির এহেন অসংবেদনশীল ও অশোভন আচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং নিন্দনীয়। এ ধরনের আচরণ ও উক্তি মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের কর্মোদ্দীপনার প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারে।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, এমন পরিস্থিতি ও আচরণের প্রতি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। এরূপ আচরণ একজন দায়িত্বরত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল। তার অসদাচরণের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক এমনটাই প্রত্যাশা করে।