
আমার কাগজ ডেস্ক
মিশরের কায়রোতে অবস্থিত জাদুঘর থেকে প্রায় ৩ হাজার বছর পুরোনো ফারাওয়ের এক অমূল্য স্বর্ণের ব্রেসলেট চুরি হয়ে গেছে। ল্যাপিস লাজুলি পাথরে অলংকৃত এই ব্রেসলেটটিকে সর্বশেষ জাদুঘরের পুনর্নবীকরণ ল্যাবরেটরিতে দেখা গিয়েছিল। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্বর্ণ পেতে ঐ ব্রেসলেটটি গলিয়ে ফেলা হয়েছে। ব্রেসলেটটি গত ৯ সেপ্টেম্বর জাদুঘরের একটি সংরক্ষণাগার ল্যাবরেটরি থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে জারি করা এক বিবৃতিতে পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয় ব্রেসলেটটি শেষ কবে দেখা গিয়েছিল তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি। আগামী পহেলা নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এই ঘটনাটি ঘটে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যা প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সরকার বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
ঐতিহাসিকদের মতে, ব্রেসলেটটির মালিক ছিলেন আমেনেমোপে। খ্রিষ্টপূর্ব ১০৭৬ থেকে ৭২৩ সালের মধ্যে মিশরের ২১তম রাজবংশের শাসক ছিলেন তিনি। তাকে প্রথমে সাধারণ কক্ষে দাফন করা হলেও পরবর্তী সময়ে শক্তিশালী শাসক প্রথম পসুসেনেসের পাশে দ্বিতীয় বারের মতো দাফন করা হয়। তার সমাধি ১৯৪০ সালে আবিষ্কৃত হয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেনসিক প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্রিস্টোস সিরোজিয়ানিস আগেই বলেছিলেন, এই ধরনের ঘটনার পেছনে মূলত অবৈধ প্রত্নসম্পদ ব্যবসাই দায়ী। তার মতে, চোরেরা ব্রেসলেটটি হয় পাচার করে বিক্রি করবে, নয়তো গলিয়ে ফেলবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুরির সূত্র খুঁজে বের করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাদুঘরের এক জন বিশেষজ্ঞই ব্রেসলেটটি চুরি করে একজন রৌপ্য ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। ঐ ব্যবসায়ী সেটি কায়রোর একটি জুয়েলারি এলাকায় ওয়ার্কশপ মালিকের কাছে পাঠান। ওয়ার্কশপ মালিক সেটি সোনা গলানোর একটি কারখানায় বিক্রি করেন, যেখানে এটি অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে গলিয়ে ফেলা হয়। সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ব্রেসলেট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার মিশরীয় পাউন্ড (৪ হাজার ডলার) জব্দ করা হয়েছে। —সিএনএন ও রয়টার্স