
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে মোহাম্মদ শাহেদ হত্যার প্রধান আসামি বাবা মো. নুরুজ্জামানকে (৬৫) দ্বিতীয় স্ত্রীসহ সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান৷ তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ ও র্যাব সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন স্ত্রীসহ অভিযুক্ত বাবা নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো সম্ভব হবে।
এর আগে গত বুধবার চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেদ নিজ বাড়িতে বাবার হাতের খুন হন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ উঠেছে, দ্বিতীয় বিয়ে করে ১০ সেপ্টেম্বর নতুন স্ত্রীকে ঘরে আনেন বাবা মো. নুরুজ্জামান। খবর পেয়ে সেদিন বিকালে শহরের ভাড়া বাসা থেকে এলাকায় আসেন তার প্রথম স্ত্রী কামরুজ্জাহান। আসার পরপরই কামরুজ্জাহানের মাথার চুলের মুঠি ধরে ফেলেন নুরুজ্জামান। এ সময় ছেলে সাহেদ মাকে বাঁচাতে গেলে তার বুকে ছুরিকাঘাত করে বাবা মো. নুরুজ্জামান। এতে ঘটনাস্থলেই শাহেদের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর মা কামরুজ্জাহান বাবা নুরুজ্জামানকে প্রধান আসামি করে মিরসরাই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এ ঘটনার চারদিন পর নতুন স্ত্রীসহ মো. নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানালো পুলিশ।
এদিকে শাহেদের স্বজনরা জানান, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন মোহাম্মদ শাহেদ। গ্রামের বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও পাশের কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে চট্টগ্রামের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন তিনি। সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে সংসারে সহযোগিতাও করতেন। মাকে কথা দিয়েছিলেন, আর কিছুদিন পর পড়াশোনার পাঠ চুকলেই চাকরিতে ঢুকবেন। মায়ের দায়িত্ব নেবেন। শাহেদের সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। মা-বাবার একমাত্র ছেলে শাহেদ ছিলেন সবার আদরের। বাবা নুরুজ্জামানের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। সাহেদকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় তার মা কামরুজ্জাহান।