
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাস গড়ে দেশে ফিরেছে। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সাফ চ্যাম্পিয়নরা। মিয়ানমার থেকে ফেরার পর রোববার (৭ জুলাই) গভীর রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল এম্ফিথিয়েটারে তাদের সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নির্ধারিত ছিল রাত আড়াইটায়। তবে থাইল্যান্ড হয়ে দলের ফ্লাইট কিছুটা দেরিতে পৌঁছায়। ফলে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নারী ফুটবলাররা হাতিরঝিলে পৌঁছান রাত ৩টার দিকে।
তবুও ওই গভীর রাতে অনেক দর্শক, ভক্ত-সমর্থক হাজির হয়েছিলেন প্রিয় ফুটবলারদের সম্মান জানাতে। ছিলেন সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীও। একেবারে রাতের নীরবতা ভেঙে আলো ঝলমলে আয়োজন যেন হয়ে ওঠে এক ভিন্ন মাত্রার উৎসব।
মঞ্চে একে একে ডাকা হয় ফুটবলারদের। ‘QUALIFIED’ লেখা বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা হয় স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি। বক্তব্য দেন অধিনায়ক আফিদা খন্দকার ও তারকা ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা। এরপর কথা বলেন কোচ পিটার বাটলার ও বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
অধিনায়ক আফিদা বলেন, “এই মুহূর্ত আমাদের জীবনের অন্যতম সেরা। সবার দোয়া চাই, যেন শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বিশ্বমঞ্চেও আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারি।”
মিয়ানমারের বিপক্ষে নির্ধারক ম্যাচে জোড়া গোল করা ঋতুপর্ণা বলেন, “ফুটবল ব্যক্তিগত খেলা নয়। কঠিন সময়ে কিভাবে লড়াই করতে হয়, তা আমরা জানি। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা আপনাদের নিরাশ করব না।”
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন, তিনি হয়তো খেলোয়াড়দের জন্য নতুন কোনো আর্থিক ঘোষণা দেবেন। তবে তিনি শুধু বলেন, “আমরা নারী দলের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আপনাদের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাফুফে দেড় কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, যা এখনো পুরোপুরি দেওয়া হয়নি। বর্তমানে কেবল কয়েকজন নারী ফুটবলার মাসে ৫৫ হাজার টাকা সম্মানী পান। দেশে ঘরোয়া লিগ না থাকায় অধিকাংশ খেলোয়াড়ই আর্থিক অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয়ার পরও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আর্থিক কোনো ঘোষণা না আসায় অনেকের চোখেই অনুষ্ঠানের উজ্জ্বলতা কিছুটা ম্লান হয়ে পড়ে।