
দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শেখ সায়েরা খাতুন ছাত্রী হলে রুমমেটদের গোপনে ভিডিও ও ছবি ধারণ, চুরি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক সাবেক ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৪ মে) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ১৭তম ব্যাচের ছাত্রী এবং ইতোমধ্যেই স্নাতক সম্পন্ন করে সনদ সংগ্রহ করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের অজান্তে তিনি মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন। এ বিষয়ে পূর্বে একাধিকবার হল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রুমমেটদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মাহফুজা মিথুন নামের এক ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, দীর্ঘদিন থেকে তার সব রুমমেট তাকে সন্দেহ করত যে, ফোনে তাদের ছবি/ভিডিও নেন, ফোন সবসময় অন্যদের দিকেই তাক করা থাকত। কিন্তু বসে ফোন টিপলে তো এতটাও বোঝা যায় না। উনি রুমেই ভিডিও কলে কথা বলতেন, রুমমেটদের দিকে ক্যামেরা তাক করে দেখাতেন যা আমরা সন্দেহ করলেও সেভাবে বিশ্বাস করি নাই।
তিনি আরও লেখেন, কালরাতে সেই সন্দেহ এতটাই বাড়ে যে উনার বর্তমান রুমমেটরা উনি গোসলে গেলে ফোন চেক করেন, আল্লাহর রহমত ছিল যে উনার ফোনে লক ছিল না। হোয়াটসঅ্যাপে দেখে, প্রচুর অ্যাবিউজিং চ্যাটিং তারা খুঁজে পায়, সঙ্গে গ্যালারিতে তাদের ছবি যেগুলো তিনি তাদের অজান্তে তুলেছিলেন। আমরা হল সুপার ও প্রক্টর স্যারকে জানালে, স্যাররা আসেন, ওনাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং ফোন জব্দ করা হয়েছে, যা প্রক্টর স্যারের কাছে গচ্ছিত আছে।
ছাত্রীরা অভিযোগ জানালে হল সুপার ও প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অভিযুক্তকে হল থেকে বের করে দেন। সেই সঙ্গে তার মোবাইল ফোন জব্দ করে প্রক্টরিয়াল দপ্তরে জমা দেওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হল সুপার অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তার ছাত্রত্ব আগেই শেষ হয়েছে, সনদও সংগ্রহ করেছেন। আমাদের কাছে মিথ্যা বলে হলে অবস্থান করছিলেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার ফোন জব্দ করা হয়েছে এবং অধিকতর তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’