
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
নগরীর আকবর শাহ এলাকায় এক গৃহবধূকে হত্যার মামলায় তার স্বামী ও মামা শ্বশুরকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেয়।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- ভোলার তমুজউদ্দীন থানার গোলকপুর এলাকার মো.শাহজাহানের ছেলে মো. ফরহাদ (৩২) ও একই থানার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে মো. সেলিম মনির (৩৭)।
সেলিম সম্পর্কে ফরহাদের মামা।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ গণমাধ্যমকে বলেন, “স্ত্রীকে গলা টিপে করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী ফরহাদ ও তার মামা সেলিমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
“পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।”
অন্যদিকে হত্যার পর মরদেহ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামির প্রত্যেককে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, খুন হওয়া জেসমিন বেগম পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আগের স্বামী ভরণপোষণ না দেয়ায় সাত বছর ধরে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানার বাদামতল খাজা রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পরে প্রতিবেশী দিনমজুর মো. ফরহাদের সঙ্গে জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর তারা ৬ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। ভোলায় ফরহাদের স্ত্রী আছে।
গ্রেপ্তারের পর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ফরহাদ বলেছিলেন, দুই সংসার নিয়ে টানাটানিতে হতাশ হয়ে জেসমিনকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন।
২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জেসমিনকে ফোন করে বহদ্দারহাট এলাকায় দেখা করতে বলেন ফরহাদ। পরে জেসমিনকে নিয়ে আকবরশাহ থানার হারবাতলী গ্যাস লাইন এলাকার পাহাড়ে নিয়ে যান।
সেখানে মামা সেলিম মনিরের সহায়তায় জেসমিনকে গলা টিপে হত্যা করেন ফরহাদ। এরপর পাহাড়ের ঝোপের মধ্যে মরদেহ ফেলে তারা চলে যান।
ওই বছরের ২ অক্টোবর পুলিশ জেসমিনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেসমিনের ছোট ভাই বাদী হয়ে নগরের আকবরশাহ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তশেষে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে ২০২২ সালের ১৭ অগাস্ট ২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
১০ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত বুধবার রায় দেয়।