
আমার কাগজ প্রতিবেদক
সংস্কার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে ইসলামীর ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে ব্রিফে এ মন্তব্য করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
জামায়াত ইসলামির পক্ষ থেকে ইসিকে ২৩টি লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তাদের দল। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
“নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে। সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২৩ দফা দাবি আমরা জানিয়েছি।”
তিনি বলেন, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব পয়েন্ট দিয়েছি তার মধ্যে মূল পয়েন্ট হলো সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রের যেসব অঙ্গ ও বিভাগ জড়িত, সেগুলো সংস্কার করেই জাতীয় সংসদে নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে এই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না, অবাধ হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পুরো রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছি না। রাষ্ট্র সংস্কারে সময় লাগে। এটা নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব।’
শুধু নির্বাচন করতে যে সংস্কারটুকু ন্যূনতম প্রয়োজন তা অন্তর্বর্তী সরকারের করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, তার জন্য যেটুকু যৌক্তিক সময়ের প্রয়োজন হবে, জামায়াতে ইসলামী তার জন্য প্রস্তুত।
এক যুগ পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে ‘জরুরি সংস্কার’ সেরে তারপর ভোট, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দাবি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
‘নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস’ (সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়)—এমন মন্তব্য করেন মিয়া গোলাম পারওয়ার। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কার নয়, শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত যেসব সুপারিশ অতি জরুরি, অন্তত নির্বাচনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত, সেগুলোর সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত ইসিকে নির্বাচনের কোনো দিন, মাস, ক্ষণ বেঁধে দেয়নি।
মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদসহ মোট ছয়জন।
অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, তাহমিদা আহমদ ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিলের পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জামায়াতের প্রথম কোনো বৈঠক হল। এর আগে দলটির নিবন্ধন থাকা অবস্থায় বার্ষিক অডিট রিপোর্ট দিতে ইসি সচিবালয়ে গিয়েছিলেন জামায়াত প্রতিনিধিরা।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে গত রোববার বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। তার চার দিনের মাথায় নিজেদের অবস্থান জানাল তাদের এক সময়ের জোটসঙ্গী জামায়াত; নির্বাচনের অনেক বিষয় নিয়েই এখন তাদের ভাবনা ভিন্ন।