স্পোর্টস ডেস্ক
ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে রেকর্ড গড়ে জয়ের পর আজ শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকরা। মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইরিশদের বিপক্ষে এই ম্যাচেও দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে নিগার সুলতানা জ্যতির দল। দারুণ এই জয়ে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লাল-সবুজের দল।
প্রথম ম্যাচে জয়টা এসেছে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রান (২৫২) করে। আজ আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ নারী দলের জয়টা এসেছে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আইরিশ মেয়েরা আগে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে করেছে ১৯৩ রান। জবাবে ৪৩.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা। এর আগে গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৬ বল হাতে রেখে জিতেছিলেন নিগার সুলতানারা। টানা দুই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা।
প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের গুরুত্বপূর্ণ ৪ পয়েন্ট পেয়ে গেছে তারা।
বাংলাদেশের আরেকটি রেকর্ডগড়া জয়ে প্রথম ম্যাচের মতো রয়েসয়ে খেলে টানা দ্বিতীয় ফিফটি করেন ফারজানা হক। এছাড়া চল্লিশছোঁয়া ইনিংস খেলেন শারমিন আক্তার ও অধিনায়ক নিগার।
রোদ ঝলমলে সকালে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা তেমন ভালো হয়নি আইরিশদের। চতুর্থ ওভারে সুলতানা খাতুনের কিছুটা থেমে যাওয়া ডেলিভারিতে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন গ্যাবি লুইস।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর আক্রমণে এসে প্রথম বলে আরেক ওপেনার সারাহ ফোর্বসকে এলবিডব্লিউ করেন নাহিদা আক্তার। সফরকারীদের সংগ্রহ তখন ৩৫ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন এমি হান্টার ও ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট। তবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি তারা। ৯১ রান যোগ করতে দুজন মিলে খেলেন ১৪৪ বল।
২৯তম ওভারে একশ পূর্ণ হয় আইরিশদের। ৫ চারে ৬৬ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি করেন হান্টার। ৩৫তম ওভারে রান আউটে ভাঙে তাদের নব্বইছোঁয়া জুটি। ২ চারে ৩৭ রান করতে ৭২ বল খেলেন প্রেন্ডারগাস্ট। একই ওভারে স্বর্ণার লেগ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন ৮ চারে ৮৮ বলে ৬৮ রান করা হান্টার। পরে দলকে এগিয়ে নেন লরা ডেলানি। সুলতানার দ্বিতীয় শিকার শিকার হন লিয়া পল। ষষ্ঠ উইকেটে উনা রেমন্ড-হোয়িকে নিয়ে ৩৪ বলে ৩৭ রান যোগ করেন ডেলানি।
ইনিংসের শেষ ওভারে ওয়াইড লং অন থেকে রাবেয়ার সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন ৫০ বলে ৩৩ রান করা ডেলানি। ১৮ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন রেমন্ড-হোয়ি। আয়ারল্যান্ড পায় বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন সুলতানা।
দুইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়ায় শুরুতে মুর্শিদা খাতুনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে দলকে চাপে পড়তে দেননি আগের ম্যাচের দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান ফারজানা ও শারমিন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৮৫ রানের জুটি।
টানা দ্বিতীয় ফিফটি করতে ৮৮ বল খেলেন ফারজানা। এরপর আর এগোতে পারেননি তিনি। ডেলানির ফুল টসে সুইপ করার চেষ্টায় শর্ট মিড উইকেটে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
এক ওভার পর ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন শারমিন। সম্ভাবনা জাগিয়েও পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তিনি। ৪টি চারে ৬৩ বলে করেন ৪৩ রান। সোবহানা মোস্তারি বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২১ বলে তিনি করেন ১৬ রান।
এরপর স্বর্ণাকে নিয়ে জুটি গড়েন নিগার। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন তারা। মাত্র ৪০ বলে ৫৩ রান যোগ করেন দুজন।
ডেলানির বলে লং অফ দিয়ে বাউন্ডারির পর ওয়াইড লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন নিগার। তবে তিনিও পঞ্চাশ করতে পারেননি। জয় থেকে ১২ রান আগে ফেরেন ৩৯ বলে ৪০ রান করে। ৪টি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছক্কা।
এমি ম্যাগুয়েইরের বলে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে একাধিক ছক্কা মারা দ্বিতীয় ব্যাটার হয়ে যান স্বর্ণা। পরে ফাহিমাকে নিয়ে অনায়াসেই বাকি কাজ সারেন তরুণ অলরাউন্ডার। ২৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
নিগারের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। একই মাঠে সোমবার সিরিজের শেষ ম্যাচে লড়বে দুই দল।