আমার কাগজ ডেস্ক
পৃথিবীতে মোট ১৯টি দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের পূর্ণ অফিস রয়েছে। তবে এই তালিকায় বাংলাদেশ নেই। এরই মধ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের অফিস খোলা নিয়ে আলোচনা চলছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনার ভলকার টুর্কের আসন্ন ঢাকা সফরের সময়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাবেক কূটনীতিকরা বলছেন, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের অফিস খোলার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক সরকারের নেয়া উচিৎ।
এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক গণমাধ্যমকে বলেন, এটি শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি একই সঙ্গে দেশের ও সমাজের ভবিষ্যৎ কৌশলগত সিদ্ধান্ত। মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে একটি উভয়সংকট আছে এবং মানবাধিকার অফিস খোলার বিষয়টি ওই প্রেক্ষাপট থেকে দেখা দরকার বলে তিনি জানান।
আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের অফিস খোলার বিষয়ে সমাজে বড় ধরনের সংলাপ হওয়া দরকার। তার মতে, ‘কিছু ব্যক্তি প্রচার করার চেষ্টা করেন যে, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের অফিস খুললে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিষয়টি সেরকম নয়। অফিস খোলা হলে সমাজে কী কী ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে এবং জনগণকে কী পালন করতে হবে, সেটির বিষয়ে সবাইকে আগে থেকে জানানো দরকার এবং তারা ওই বিষয়গুলো করতে রাজি কি না, সেটিও বিবেচনায় নেয়া দরকার।
এদিকে বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিসের মাধ্যমে একজন মানবাধিকার উপদেষ্টা জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশন অফিসের প্রতিনিধিত্ব করেন।
এ বিষয়ে আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, বড় ধরনের বেকায়দায় না পড়লে কোন দেশই জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের অফিস খোলার অনুমতি দেয় না।
কেন অনুমতি দেয়া হয় না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস খোলার অনুমতি দেয়া একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে সমাজে ব্যপক পরিবর্তন আনতে হবে। জনগণ সেটি চায় কি না, সেটি বিবেচনায় নিতে হবে।
এ বিষয়ে সাবেক আরেকজন কূটনীতিক বলেন, ‘বহুপক্ষীয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশন বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ের প্রসারের জন্য কাজ করে। বাংলাদেশে অফিস খোলা হলে এ বিষয়ে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।‘
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নারী ও পুরুষের মধ্যে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনের একটি নিয়ম আছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনের ব্যবস্থা মেনে নিলে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমানভাগে সম্পত্তি বণ্টন করতে হবে। সমাজে এর প্রভাব কী হতে পারে, সেটি বিবেচনায় নেওয়ার দরকার আছে।’
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশন কিছু বিষয়ের প্রসার চায়, যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে গ্রহণযোগ্য নয়। এরমধ্যে সমকামিতার বৈধতা বা সার্বজনীন শিক্ষা (যৌন শিক্ষাসহ) বা সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ইত্যাদি।