আমার কাগজ প্রতিবেদক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে ভাড়া নিয়ে হেনস্তার ঘটনায় ভিক্টর ক্লাসিকের ১২টি বাস আটকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে সদরঘাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসব বাস আটকে রাখেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৪ অক্টোবর গুলিস্তানে হাফ পাশ নিয়ে তর্কবিতর্কের সময় হেনস্তার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাত এশা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার হেনস্তার ঘটনাটির বিস্তারিত লিখে পোস্ট করেন। পোস্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
ফেসবুকে জান্নাত এশা লেখেন, গত ১৪ অক্টোবর আমি নতুন বাজার (বাঁশতলা) থেকে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে উঠি। আমার সঙ্গে আমার ছোট বোন ছিল। কিছুক্ষণ পর হেলপার ভাড়া চাইতে এলে আমি সদরঘাটের হিসেবে ৩০+৩০=৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে দিই। আর বলি যে, লাস্ট স্টপেজে নামবো।
তখন হেলপার বলে, এটা গুলিস্তান পর্যন্ত যাবে। আমি বললাম, তাহলে টাকা ফেরত দেন। তখন শুরু হয় ঝামেলা। তার মতে নতুনবাজার থেকে গুলিস্তান বা সদরঘাট দুই জায়গার ভাড়া নাকি একই।
পরে বললাম, আমি স্টুডেন্ট হাফ ভাড়া কাটেন। তাদের নাকি আবার হাফ ভাড়া কাটার ও সিস্টেম নেই। এরপর বললাম, গুলিস্তান থেকে অন্য ভিক্টরে উঠলেও তো জনপ্রতি ১০ টাকা করে নেবে। ওই টাকা ফেরত দেন। আর আমি জগন্নাথের স্টুডেন্ট। আপনারা তো ঘুরে ওখানেই আসবেন। তখন দেখবোনে, আপনারা স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন কিনা। তখন চালক বলে যে, এরা বহু ঝামেলা করে ‘ধইরা নামায় দে’।
এশার ভাষ্য, ‘আমি চিল্লাচিল্লি করি যে, হাফ ভাড়া কাটেন। নইলে গুলিস্তান পর্যন্ত ২০ টাকা করে রাখেন। পরে সামনের দিকে এক লোক বলে যে, ঠিকই তো আপনি স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন, নইলে টাকা ফেরত দেন। পরে সবার চিল্লাচিল্লিতে হেল্পার ১০ টাকা ফেরত দিয়ে যায়।
আমি স্টুডেন্ট পরিচয় দেয়ার পরও তারা হাফ ভাড়া কাটেননি। সমস্যা হলো, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পরও আমি কেন এমন হেনস্তার স্বীকার হব? গাড়ি গুলিস্তান পর্যন্ত আসার কথা। কিন্তু জিপিও তে আসার পর যানজটে পড়ার কারণে অনেকে নেমে যাচ্ছিল। তাই আমিও নেমে পড়ি, যেহেতু সঙ্গে ছোট বোন ছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আমাদের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেছে একটি বাসের চালক ও হেলপার। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাস আটক করে রেখেছে। আমরা বিষয়টি সুরাহার জন্য বাসের মালিককে আসতে বলেছি। তারা এখনো আসেনি।
প্রক্টর আরও বলেন, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী মৌখিকভাবে আমাদের একটি অভিযোগ জানিয়েছে। লিখিতভাবেও সে একটি অভিযোগ দিবে বলেছে। দুই পক্ষের কথা শুনে আমরা বিষয়টি সুরাহা করব। সমাধান না হাওয়া পর্যন্ত বাসগুলো এভাবে আটক থাকবে।
যদিও এ বিষয়ে ভিক্টর ক্লাসিক বাসের মালিক পক্ষের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।