আমার কাগজ প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। দায়িত্বের দিনগুলোতে যুমনাতেই থাকবেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের নাম ঘোষণার পরই যমুনার চেয়ার-টেবিল, ফার্নিচার নতুন করে সাজানো হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতার কাজও চলছে জোরেশোরে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রমনা থানার পুরনো ভবনের উল্টোদিকে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় এই অতিথি ভবনে গিয়ে দেখা যায়, পরিচ্ছন্নকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। কেউ সীমানা প্রাচীরের পরিষ্কারে ব্যস্ত আছেন। আবার কেউ ভেতরে ঝাড়ু দিচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত সাজসজ্জার কাজে। কারও দম ফেলানোর কোনো ফুরসত নেই।
একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ‘মাঠের ঘাস কাটা ও গাছগাছালি পরিষ্কার হয়েছে। কিছু কাজ বাকি আছে। দ্রুতসময়ের মধ্যে তা শেষ হবে।’
সরকারি আবাসন পরিদফতরের পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘এবারও প্রধান উপদেষ্টার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল শাখা থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকেই কাজ শুরু হয়েছে। পিডব্লিউডির প্রধান প্রকৌশলী এই কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনাতেই ছিলেন।
২০০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদও এই ভবনেই ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে।
এরপর সেদিন ভোররাতে এক ভিডিওতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানে নাহিদ বলেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সর্বজন গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তিনি ছাত্র-জনতার আহ্বানে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এই গুরুদায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।
পরদিন মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানেরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠক হয়। সেখানে অধ্যাপক ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার সিদ্ধান্ত হয়।