আমার কাগজ প্রতিবেদক
১২ বছর আগে গাজীপুরে শ্রমিক নেতা আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় দ্রুত আপিল শুনানি করতে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. আলী। সোমবার (৬ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বিভাগে আসামি মো. আলীর পক্ষে তার আইনজীবী এ আবেদন করেন।
এসময় মো. আলীর আইনজীবী আপিল বিভাগকে বলেন, তার মক্কেল ২২ বছর ধরে জেলে আছে। আপিলটিও ২০১৬ সালের, বিষয়টির যেনো শুনানিটি করে দেয়া হয়। পরে প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্য আবেদনটি গ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমাবেশে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলার রায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল ঘোষণা করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। রায়ে মামলার আসামি বিএনপির নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। মৃত্যদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আল আমিন ও রতন ওরফে ছোট রতন নামের দুজন মারা যান। বাকি ২৬ জনের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে আটক আছেন, নয়জন পলাতক।
পরে ২০১৬ সালের ১৫ জুন মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে সাতজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তারা হলো, মো. আলী, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু, আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু, রতন মিয়া ওরফে বড় মিয়া রতন, জাহাঙ্গীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর (১), আবু সালাম ওরফে সালাম ও মশিউর রহমান ওরফে মনু।
এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির, খোকন, লোকমান ও দুলাল মিয়া।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকা ছয় আসামি হলেন, নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দীপু, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু। যাবজ্জীবন বহাল রাখা হয় টিপু ও নুরুল আমিনের। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন মনির, রকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী ও জাহাঙ্গীর।
মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও শ্রমিকনেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ১৯৯০ সালে গাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছাড়াও জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।