ফেনী প্রতিনিধি
ফেনী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের নাজির রোডের আনোয়ার উল্লাহ সড়কে নির্মাণাধীন রুহুল আমিন ভবনের সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে তিন ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় এক আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এতে অপর এক আসামিকে জামিন দেওয়া হয়।
মামলার বাদি বাংলাদেশ মানবাধিকার সম্মিলন-বামাসের চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম নান্টু বলেন, মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) প্রধান আসামি ভবন মালিক রুহুল আমিনকে অস্থায়ী জামিন এবং তার ছেলে নাজমুস শাহাদাত সোহাগের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন ফেনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেকুর রহমান।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর সকালে শুনানি শেষে প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৬ জুলাই সকালে নাজির রোডের আনোয়ার উল্লাহ সড়কে সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান মুন্সি, নুরুল ইসলাম মুন্সী ও মনিরুজ্জামান মুন্সি। তারা তিনজন ভাই। তাদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে বলে জানা গেছে। এই শ্রমিকরা নির্মাণাধীন বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন এবং বিভিন্ন জায়গায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন।
ঘটনার দিন ফেনীতে বৃষ্টি হওয়ায় তারা কাজে যায়নি এবং সেখানে ঘুমিয়েছিলেন। বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে গ্যাস জমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়। এ সময় ভবনের নিচতলাসহ দ্বিতীয় তলার ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনার চার দিন পর ৩০ জুলাই ফেনী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সম্মিলনের চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম নান্টু। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখে বিষয়টি অবহেলাজনিত মৃত্যু ও ভবন নির্মাণে ত্রুটি বলে মনে হওয়ায় মামলা করি।
ফেনী ফায়ার সার্ভিসের তৎকালিক উপসহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দি বলেন, নির্মাণাধীন ভবনটিতে সেপটিক ট্যাংকের গ্যাস অপসারিত হওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না, ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সিআইডি ফেনীর পরিদর্শক শামছুল ইসলাম বলেন, সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে তিনজন নিহতের ঘটনা তদন্তে ভবন মালিকের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার সত্যতা মিলেছে।