
আমার কাগজ প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর দশমিনায় নারী-শিশুসহ ছয়জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এতে এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্য দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এক যুবককে গাছের মগডাল থেকে নামিয়ে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর হোসনাবাদ গ্রামের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম সাফায়েত হোসেন (৮)। সে একই এলাকার জামাল ব্যাপারীর ছেলে। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন মুইন হাসান (৮) ও তাঁর মা মোছা. মরিয়ম (২৮), পঞ্চম আলী সরদার (৪৭), বাবুল সরদার (৪৭), মোছা নাছিমা বেগম (৩২। অন্যদিকে আটক ব্যক্তির নাম সবুজ মৃধা (৩০)। আহত ও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রতিবেশী।
সবুজ মৃধাকে মাদকাসক্ত দাবি করে স্থানীয় ইউপির সদস্য আবু বকর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল বিকেলে কোনো কারণ ছাড়াই একই বাড়ির ওই ছয়জনকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন সবুজ। এ সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাফায়েত, মুইন ও তাঁর মা মরিয়মকে বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। বরিশাল নেওয়ার পথে সাফায়েতের মৃত্যু হয়। মুইন ও তাঁর মা মরিয়মকে বরিশালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
কবির চৌকিদার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্তির ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন সবুজ। তাঁর মতিগতি বোঝা যায় না। গতকাল একটি বাড়িতে ঢুকে যাকে সামনে পেয়েছেন, তাঁকেই কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছেন। এরপর লোকজনের উপস্থিতি দেখে ভয়ে একটি গাছের মগডালে আশ্রয় নেন সবুজ। রাতে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা তাঁকে গাছ থেকে নিচে নামান।
ওই ঘটনার পর সবুজ ৬৫ থেকে ৭০ ফুট উঁচু একটি চাম্বলগাছের মগডালে আশ্রয় নেন বলে জানান দশমিনা ফায়ার সার্ভিসের অধিনায়ক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ওপর থেকেই সবুজ কয়েকটি গাছ পরিবর্তন করতে থাকেন। তাঁকে নামাতে ও পালানো রোধে চারটি গাছ কাটা হয়। চার ঘণ্টার চেষ্টায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে নিচে নামানো হয়। সবুজ নিজেও আহত ছিলেন।
সবুজকে গাছ থেকে নিচে নামিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ আবদুল আলীম গণমাধ্যমকে বলেন, সবুজ গাছের মগডালে থাকা অবস্থায় হাতে থাকা দা দিয়ে নিজের হাত ও শরীরের একাধিক স্থানে জখম করেন। তাঁকেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত শিশুটির দাফন শেষে হয়তো থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মামলা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।