
আমার কাগজ প্রতিনিধি
৬৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সংস্কার কাজ শেষ না হতেই ইতোমধ্যে সড়কের বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং উঠে গেছে। এমনকি সড়কের কিছু অংশে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ। ধসে পড়েছে সড়কের বিভিন্ন অংশ।
সোমবার (১২ মে) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ অফিসে দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের একটি টিমের পরিদর্শনে উঠে আসে এমন চিত্র। এ সময় প্রকল্প কাজের নথিপত্র সংগ্রহ করে সরেজমিনে সড়কটি পরিদর্শন করে দুদকের প্রতিনিধিদল। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করেছেন তারা৷
দুদক জানায়, সড়কের কাজ ঘিরে সম্প্রতি সময়ে নানা অভিযোগ ওঠে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে প্রকল্পে দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৫০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৩৮ কোটি টাকার অডিট আপত্তি১৫০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৩৮ কোটি টাকার অডিট আপত্তি
দুদকের অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী লিটন আহম্মেদ খান। তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে দুদকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করে দেখব এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বলেন, সাড়ে ছয়শত কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিডিউল মোতাবেক সঠিকভাবে কাজ করে হচ্ছে না। সেই প্রেক্ষিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। আমরা অনিয়ম দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছি। ঠিকমতো বিটুমিন ব্যবহার করা হয়নি। হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে পিচ। রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় ধসে গেছে। আমরা পরীক্ষার করার জন্য নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করেছি। আমরা কমিশন বরাবর রিপোর্ট দাখিল করব। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ২০২২ সেপ্টেম্বর মাস থেকে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ শুরু হয়। একদফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে। সর্বমোট ৬৪৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জহুরুল লিমিটেড কাজ বুঝিয়ে দেয়নি এখনো। তারা কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগে অভিযোগ গুলো তদন্ত করে কাজ বুঝে নেয়া হবে। অনিয়ম দুর্নীতি পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।