
র্স্পোটস ডেস্ক
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে গত মঙ্গলবার থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সীমান্তে চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ভারতের চালানো একটি ড্রোন হামলা পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়াম এলাকায় আঘাত হানে। ফলে সেদিনের পেশোয়ার জালমি ও করাচি কিংসের ম্যাচটি বাতিল করা হয়। এরপর নানা আলোচনা ও নাটকীয়তার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) পুরো পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) স্থগিত ঘোষণা করে।
এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন পাকিস্তানে আটকা পড়েন। বিসিবিও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তাদের দেশে ফেরাতে পিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সব শঙ্কা কাটিয়ে তারা পাকিস্তান ছেড়ে দুবাই হয়ে দেশে ফেরেন।
দুবাইয়ে পৌঁছার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিশাদ জানান, পিসিবি খেলোয়াড়দের কাছে দুটি ড্রোন হামলার তথ্য গোপন রেখেছিল। তার ভাষায়, ‘রাওয়ালপিন্ডিতে হামলার পর পিসিবি চেয়েছিল বাকি ম্যাচগুলো করাচিতে আয়োজন করতে। কিন্তু বিদেশি খেলোয়াড়দের মতামত চাওয়ার জন্য একটি সভা ডাকা হয়। সবাই বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একমাত্র নিরাপদ জায়গা দুবাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিসিবি চেয়ারম্যান আমাদের করাচিতে রাজি করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তখন গোপন রেখেছিলেন যে, এর আগের দিন দুটি ড্রোন হামলা হয়েছে—যা আমরা পরে জানতে পারি। এরপর আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেই দুবাই যাওয়ার, আর পিসিবি চেয়ারম্যান তখন আমাদের অনেক সাহায্য করেন।’
সবচেয়ে ভয়ের মুহূর্ত এসেছিল পাকিস্তান ছাড়ার ঠিক পরেই। রিশাদ বলেন, ‘আমাদের উড়োজাহাজ ছাড়ার ২০ মিনিট পরেই ওই বিমানবন্দরে একটি মিসাইল আঘাত হানে। খবরটা খুব ভয়ংকর এবং মর্মান্তিক ছিল। দুবাই পৌঁছে আমরা স্বস্তি পেয়েছি।’
এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পরিবারও ছিলেন উৎকণ্ঠায়। রিশাদ জানান, ‘বাইরে খেলতে গেলে আমার পরিবার সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকে। এবার যখন তারা পাকিস্তানের ঘটনা জানতে পারেন—বোমা, মিসাইল—তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি যেন দুশ্চিন্তা না করে।’
সতীর্থ নাহিদ রানার অবস্থাও তুলে ধরেছেন রিশাদ। ‘নাহিদ একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। আমি চেষ্টা করেছি ওকে সাহস দিতে। বলেছি, টেনশনের কিছু নেই—আমরা দু’জন একসঙ্গে আছি, আল্লাহ আছেন—সমস্যা হবে না।’