
শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আমার কাগজ প্রতিবেদক
হঠাৎ করে মাংসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকায় বিক্রি করে আসছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৬৯৫ টাকায় বিক্রি করছেন এ ব্যবসায়ী।
এ বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ‘খামার থেকে যে দামে গরু কিনতে হচ্ছে, তাতে ৫৯৫ টাকা দরে মাংস বিক্রি করে পোষাতে পারছিলাম না। লোকসানে পড়তে হচ্ছে। ক্রেতাদের ভিড় অনেক। বাধ্য হয়ে মাংসের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বাড়াতে হয়েছে।’
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খামারে গরুর দাম আগের মতোই আছে। বাংলাদেশের কেউ বলতে পারবে না গরুর দাম বেড়েছে। হঠাৎ রমজানে গরুর দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুলভমূল্যের গাড়িতে ৬০০ টাকায় মাংস বিক্রি করেও সীমিত লাভ হচ্ছে। মালিবাগের খোরশেদ ৬০০, পুরান ঢাকার নয়ন আহমেদ ৫৭০ ও মিরপুরের উজ্জ্বল ৫৮০ টাকায় এখনও গরুর মাংস বিক্রি করছেন। ঢাকার ১৮টি স্থানে কম দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খলিলুর রহমান সারা জীবন বাজারের চেয়ে ৫০ টাকা বেশি দামে মাংস বিক্রি করেছেন। হঠাৎ গত ছয় মাস ধরে কম দামে বিক্রি করে তিনি ভাইরাল হন। কিন্তু এখন আবার কেন দাম বাড়িয়েছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। সরকার চাইলে সবাই একদামে গরুর মাংস বিক্রি করতে বাধ্য হবে। এ জন্য একটা যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
অনেক দিন ধরে কিছু ব্যবসায়ী, সুপারশপের কর্মকর্তা ও কিছু ক্রেতা অভিযোগ করছেন, খলিল কম দামে বিক্রি করে ভাইরাল হওয়াকে পুঁজি করে নিম্নমানের মাংস বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন। তবে চলতি মাসে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এই ব্যবসায়ীকে ‘ব্যবসায় উত্তম চর্চার স্বীকৃতি’ দিয়ে পুরস্কৃত করেছে।
যদিও গণমাধ্যমকে খলিল জানিয়েছেন, ‘চাপে আছেন তিনি।’ তবে ‘নানামুখী চাপ’ বলতে তিনি কী বোঝাচ্ছেন কিংবা কী ধরনের চাপ আছে, তা প্রকাশ করেননি।
এদিকে দাম বৃদ্ধির একদিনের মাথায় খলিলের মাংসের ব্যবসায় ভাটা পড়েছে।
রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরে ওই দোকানে আগের মতো ক্রেতাদের তেমন একটা দেখা মিলছে না। অনেকে আবার মাংস কিনতে এসে দাম দেখে ফেরত যাচ্ছেন।
ক্রেতাদের অভিযোগ, এটা একটা সিন্ডিকেট। প্রথমে কম দামে বিক্রি করে লোভ দেখানো হয়, এরপরই তাদের আসল রূপ দেখা যায়।