আমার কাগজ ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। টানা নয় দিনের বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি এই হামলার বিরোধিতা করে যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ দেশে দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। বাদ যায়নি যুক্তরাষ্ট্রও। শনিবার (১৪ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন হাজারও মানুষ। এসময় তাদের ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে হোয়াইট হাউসের সম্মুখভাগ।
আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার হাজার হাজার ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভকারী যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে জড়ো হয় এবং হোয়াইট হাউসের সামনে ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন’ স্লোগানে ঝড় তুলে বিক্ষোভ করেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আমেরিকানদের ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভের পাশাপাশি ‘ইসরায়েল-পন্থি’ বিক্ষোভ হওয়ার কথাও জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েলি এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবারের এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা তাদের হাতে বিভিন্ন বার্তা ও স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড রেখেছিলেন এবং এসব প্ল্যাকার্ডে ‘দখলদারিত্বের অবসান করুন’ এবং ‘এখনই যুদ্ধবিরতি চাই’-এর মতো বার্তাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ওয়াশিংটনে শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেন আহমেদ আবেদ। তিনি বলছেন, ‘আমি আশা করি আমরা সবাই মিলে কিছু করতে পারি, আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারি, যদি শুধু যুদ্ধটাই বন্ধ করতে পারতাম।’
ইসরায়েলের হাতে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারা (গাজার ফিলিস্তিনিরা) কারাগারে আছেন।’
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভকারী মিছিল-সমাবেশ করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শনিবার নতুন করে বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড ও কানাডায়। এসব বিক্ষোভে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা বন্ধের দাবি করা হয়।
বিবিসি বলছে, শনিবার হাজার হাজার ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভকারী রাজধানী শহর লন্ডন এবং ম্যানচেস্টারসহ যুক্তরাজ্যজুড়ে রাস্তায় নেমেছেন। এর মধ্যে লন্ডনে বিবিসির নিউ ব্রডকাস্টিং হাউস থেকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ।
এসময় লন্ডনে এক হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভ থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজনকে ফৌজদারি অপরাধের জন্য এবং দুজনকে জনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ফিলিস্তিনি পতাকা ও ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অক্সফোর্ড সার্কাসের কাছে জড়ো হন এবং পরে সেখান থেকে মিছিল করে তারা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকারি বাসভবন ও অফিস ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে যান।
এসময় ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন।
আল জাজিরা বলছে, শনিবার আয়ারল্যান্ড ও কানাডার জনগণ ফিলিস্তিনের পক্ষে সমাবেশ করেছে। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভকারীরা তাদের শহরের রাস্তায় নেমে আসছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।