
আলি জামশেদ হাওর অঞ্চল থেকে
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে স্কুল ঘরে সন্ধ্যায় অগ্নিকান্ডের পর সকালে ধ্বংসস্তূপে মিলেছে মানব কঙ্কাল। একটি পক্ষ লাশের দাবি জানালেও ডিএনএ টেষ্ট না করা পর্যন্ত সাধারণ ডায়রী মূলে পুলিশ বাদী হয়ে লাশ পরিক্ষার জন্যে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে জানায়।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মাঝে নানান কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দাম পাড়ার কারপাশা মাতাবউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের পিছনে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আগুন লাগার পরদিন সকালে। আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটাররা এসে আগুন নিভিয়েছেন বুধবার সন্ধ্যায়। এ সময়ে এলাকাবাসী, পুলিশ, ফায়ার ফাইটার ও উৎসুক দর্শনার্থীরা কোন কঙ্কাল বা লাশ দেখতে পায়নি বলেও জানা গেছে।
তবে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে পুড়ে যাওয়া স্কুল ঘর দেখতে যখন স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায়। এ সময় উৎসুক মানুষ পুড়ে যাওয়া ঘরের ধ্বংসস্তূপের উপর মাংসবিহীন, মাথা বিহীন, একটি মানব কঙ্কাল দেখতে পান। বিষয়টি জানাজানি হলে নিকলী থানাপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন, স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাস্থলে পুনরায় হাজির হন। কঙ্কালটি দেখে তারা সকলেই অবাক হয়ে যান।
অপরদিকে গত ১৯ এ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিন দামপাড়া গুলহাটি গ্রামের আনোয়ারা বেগম ওরফে আঙ্গুরা (৬০) নামের এক নারী নিখুঁজ ছিলেন বলে ওই নারীর স্বজনরা জানান। আঙ্গুরা দামপাড়া স্কুল এলাকার নিয়মিত গাছের শুকনো পাতা ও লাকড়ি কুড়াতেন বলে জানান তার ছেলেও স্বজনরা। নিখোঁজ হওয়ার পর আঙ্গুরার ছেলে ফেরদৌস (৪০) ও তার স্বজনরা আঙ্গুরার সন্ধান পাননি বলেও জানান। ফেরদৌস ও আঙ্গুরার স্বজনরা স্কুলের পুড়ে যাওয়া ঘরে একটি কঙ্কালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের দক্ষিণ পাশের নদীর তীরে আঙ্গুরা বেগমের ব্যবহৃত উড়না দেখে ফেরদৌস তার মায়ের উরনা বলে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময়ে ঘটনাস্থলের কাছে ফেরদৌস ও আঙ্গুরার স্বজনরা কঙ্কালটি আঙ্গুরার বলে দাবি করেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা ক্রাইম এন্ড এডিশনাল পুলিশ সুপার মুকিত সরকার ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরিক্ষা করেন। নিখোঁজ নারীর স্বামী সমেন আলী দফাদার ও ছেলে ফেরদৌসসহ বিদ্যালয়ের নাইটগার্ড মামুন মিয়াকেও (৩৫) পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে একটি পক্ষ লাশের দাবি তুললেও লাশটি সনাক্ত না করে কাউকে হস্তান্তর এবং এই বিষয়ে কোন ব্যক্তির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি।
লাশের ঘটনার বিষয়ে সততা স্বীকার করেছেন নিকলী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী আরিফ উদ্দিন।
এছাড়াও জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিমের কাছে কঙ্কালটি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান। তবে সবশেষে বিকাল পর্যন্ত কোন মামলা বা কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও তিনি জানিয়েছেন।