আমার কাগজ প্রতিবেদক
সৌদি আরবের দাম্মামের হুফুফ শহরের আহসা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকার একটি সোফা কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নয়জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে সাতজন বাংলাদেশি।
শনিবার (১৫ জুলাই) রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়। শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে নিহত সাত বাংলাদেশির মধ্যে চারজনেরই বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়।
নিতরা হলেন, বাগমারা উপজেলার বরাইপাড়া গ্রামের জফির উদ্দিনের ছেলে মো. রুবেল হোসাইন, জমির উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, শাহাদত হোসেনের ছেলে আরিফ ও একই উপজেলার বড় মাধাইমুড়ি গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে ফিরুজ আলী সরদার। নিহতদের মধ্যে সাজেদুল ও আরিফ সম্পর্কে চাচা ভাতিজা আর নিহত রুবেল ছিলেন তাদের প্রতিবেশী। তারা কেউ ছয় মাস আগে, কেউ তিন বছর ধরে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে আল আহসা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ড হয়। এতে নয়জন অভিবাসীসহ সাত বাংলাদেশি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন ও দু’জন আহত হন। পরে খবর পেয়ে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নির্দেশে কাউন্সিলর (শ্রম) মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তারা বিষয়টি মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
নিহত ফিরুজের বাবা আনিসুর জানান, বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভালো আছে বলে জানিয়েছিল। প্রায় ছয় মাস আগে আমার ছেলে সৌদিতে গিয়েছিলেন। ছেলেকে জীবিত তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তাই অন্তত ছেলের মরদেহ নিজ এলাকায় নিয়ে এসে দাফন করাতে চাই।
নিহত রুবেল হোসাইনের বাবা জফির উদ্দিন বলেন, শনিবার সকালে খবর পেয়েছি আমার ছেলে মারা গেছেন। সাজেদুল ইসলাম প্রায় আট বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তারও মৃত্যু হয়েছে। তারা একসঙ্গেই থাকতেন। এদের হাত ধরে একই কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিল রুবেল। মাত্র ছয় মাস আগেই রুবেল সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিল।
নিহত ফিরুজের বাবা আনিসুর রহমান বলেন, ছয় বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিল ফিরুজ। ছেলে যখন বিদেশ যেতে চায়। তখন কিছু টাকা জমিয়ে ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ঘটনার পর শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসকের হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী শনিবার বিকেলে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি এরই মধ্যে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার সুমন চৌধুরী জানান, সরকারিভাবে তাদের পরিবারের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এ বিষয়ে তাদের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।