ফজলুল হক, নোয়াখালী প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ইউএনও’দের বদলিজনিত কারণে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে বদলির নির্দেশে আয়োজিত বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন। সোনাইমুড়ীর নকলের আতঙ্ক খ্যাত ইউএনও ইসমাইল হোসেনকে অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় দিলেন সোনাইমুড়ী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। ইউএনও ইসমাইল হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলায় ।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মন জয় করে গেলেন। তার বদলির খবর শুনে অনেকেই অশ্রু সংবরণ করতে দেখা যায়। তার মেধা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সোনাইমুড়ী উপজেলাবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। যখনই কোথাও কোনো সংকট দেখেছেন তিনি ছুটে গেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন সবার বিপদ-আপদে। প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তি ছাড়াও সোনাইমুড়ী উপজেলার সাধারণ মানুষদের আস্থার জায়গায় ছিলেন ইউএনও মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন.বিশেষ করে এসএসসি /দাখিল পরীক্ষায় কেন্দ্র ও পরীক্ষার হলকে নকল মুক্ত করতে তিনি নিরলস কাজ করেছেন যা সোনাইমুড়ীর শিক্ষা সচেতন মানুষ সারাজীবন মনে রাখবেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলার আওয়ামী লীগের সম্পাদক আ প ম বাবুল বাবু বলেন। সোনাইমুড়ীতে যোগদান করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরগুলোতে ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। আমার চোখে তিনি একজন সফল ইউএনও।
সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, এমন মানবিক গুণসম্পন্ন ইউএনও’র কথা ভোলা যায় না। তার সততা, কর্মনিষ্ঠায় আমি মুগ্ধ। তার মতো ইউএনও যদি প্রতিটি উপজেলায় থাকতো তাহলে মানুষ অতি সহজে সেবা পেত।
বিদায়ী সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলায় যে কাজ করেছি তা সবই সম্ভব হয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সহকর্মীদের সহায়তায়।
তিনি বলেন, যে কাজটি করেছি আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। বদলি তো চাকরিরই অংশ। সোনাইমুড়ী মন জয় করতে পেরেছি এটাই বড় পাওয়া।
এইদিকে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ইউএনও’দের বদলিজনিত কারণে চলে যাচ্ছেন এ খবর শুনে কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল মুছতে দেখা গেছে এক প্রতিবন্ধী রিক্সা চালক ।
শুধু প্রতিবন্ধী রিক্সা চালক নয় ইউএনও’র সহকর্মী, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের বেশিরভাগ মানুষের চোখেই ছিল জল। আবেগ থামাতে না পেরে কেঁদে ফেলেন অনেকেই। ইউএনও মুহাম্মদ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বদলির খবরে সোনাইমুড়ী তৈরি হয় আবেগঘন এক পরিবেশ।
উল্লেখ্য, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এছাড়াও বিগত এক বছরে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্যাপক সামাজিক কাজে এবং সহায়তা করেছেন সোনাইমুড়ী সকল শ্রেণীর সমাজকর্মীদের।
বিদায় বেলায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সুজন, সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের, সাধারণ সম্পাদক আ প ম বাবুল বাবু, জেলা পরিষদের সদস্য ভিপি বাহার, সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন, সোনাইমুড়ী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিন মিয়া। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেসের কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নাজিমউদ্দিন, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপজেলা সকল দপ্তরের অফিসার ব্যক্তিবর্গ ।