
সিলেট প্রতিনিধি
টানা ভারী বর্ষণে সিলেটের গোলাপগঞ্জে টিলা ধসে মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর এক নারী ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো মাটিচাপা অবস্থায় রয়েছেন আরেকজন। রোববার (০১ জুন) ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ৭ নম্বর লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নের বখতিয়ার ঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বখতিয়ারঘাট গ্রামের বাসিন্দা মো. ইয়াজ উদ্দিন সপরিবারে আধাপাকা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাতে হঠাৎ টিলা ধরে ঘরের ওপর পড়লে তারা মাটিচাপা পড়েন। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু তারা মাটিচাপা পড়া পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ইয়াজ উদ্দিন ছাড়াও মাটিচাপা পড়েছেন তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তিনজনকে উদ্ধার করে। আরেকজনকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি।
লক্ষনাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলকু জানান, আমাদের ইউনিয়নবাসীর জন্য একটি দুঃখের রাত। গ্রামের ইয়াজ উদ্দিন সপরিবারে মাটিচাপা পড়েছেন। তারা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলেও রাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, রাত ১টা থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ঝড়ে রাস্তায়ঘাটে জলাবদ্ধতা ও গাছ পড়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ঘটনাস্থলে বিকল্প রাস্তা হয়ে অনেক ঘুরে যেতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস সিলেট তালতলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা গেছে, খবর পেয়ে ভোর ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট স্টেশন অফিসার টিটক শিকদারের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে পৌঁছায়।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে খবর দিচ্ছি প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কোনো সংস্থাই আসতে পারছে না। আমরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছিলেন। তিনজনের মাথা বের করার চেষ্টাকালে আবারও টিলা ধসে ঘরের ওপর পড়ে ঘরটি সামনের দিকে হেলে পড়েছে। তাছাড়া ভারী বর্ষণও চলছে। যে কারণে ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার কাজ চালাতে পারিনি।
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার টিটক শিকদার বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। কিন্তু ঝড়ে অনেক বড় গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা বন্ধ রয়েছে। তাই গাছ সরিয়ে যেতে একটু সময় লেগেছে।
একই রাতে উপজেলার চৌধুরীবাজার ও বিয়ানীবাজার এলাকায়ও টিলা ধসের খবর পাওয়া গেছে। তবে ওই দু’টি স্থানে কেউ হতাহত হননি।