সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জ পৌর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচি চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে করা তিনটি মামলাতেই আসামি হিসেবে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, জান্নাত আরা হেনরিসহ আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একে একে তিনটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এসব মামলা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলাগুলোর এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল পৌর শহরের এস এস সড়ক দিয়ে শহরের ভেতর দিকে আসে। তখন আসামিরা বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুলিবর্ষণ ও হামলা চালান। এ সময় রঞ্জু মিয়া, আবদুল লতিফ ও মো. সুমন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গয়লা মহল্লার বাসিন্দা আবদুল লতিফ (২৬) নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর বোন সালেহা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, জান্নাত আরা হেনরিসহ ১৫৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদারের নাম রয়েছে। এ ছাড়া সদর ও কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
অপর দিকে পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাছুমপুর মহল্লার মাজেদ আলীর ছেলে রঞ্জু মিয়া (৪০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ায় তাঁর স্ত্রী মৌসুমী খাতুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। রঞ্জু শহর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই মামলায় আসামি হিসেবে সাবেক দুই সংসদ সদস্যের পাশাপাশি ১৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গয়লা মহল্লার মো. সুমন (২২) নিহত হওয়ার ঘটনায় হওয়া মামলার বাদী তাঁর বাবা গঞ্জের আলী। এই মামলায় হাবিবে মিল্লাত, জান্নাত আরা হেনরিসহ ১৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।