আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পৃথিবীর কেন্দ্রে কিভাবে পৌঁছানো যায়, তা নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। কিন্তু এর মধ্যে উঠে এলো নতুন তথ্য। এতে জানা গেছে পৃথিবীর কেন্দ্র পৌঁছানোর একটি গুপ্তরহস্য প্রথম আবিস্কার করেছিলেন একজন জার্মান অধ্যাপক। উদ্ধার হওয়া এক পাণ্ডুলিপিতে পৃথিবীর একটি গুহার উল্লেখ রয়েছে, যাতে প্রবেশ করলে পৌঁছানো যায় পৃথিবীর কেন্দ্র।
পৃথিবীর কেন্দ্রের সন্ধানে জার্মান অধ্যাপক অটো লিডেনব্রক ও তার ভাতিজা এরজন গাইডকে সঙ্গে নিয়ে ওই গুহার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তাদের সেই অভিযান একটি বিলুপ্ত আগ্নেয়গিরি এবং সুমুদ্রের কাছে গিয়ে শেষ হয়েছিল। সেখানে তারা একটি ভূগর্ভস্থ দুনিয়ার খোঁজ পেয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়।
সেই দুনিয়ায় যেমন ছিল আলোকিতা শিলা, তেমনি ছিল প্রাগৈতিহাসিক কালের বন এবং সামুদ্রিক জীবন চক্র। যদিও এটাকে গল্প বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। আর এই গল্প থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে ফরাসি লেখক ‘জার্নি টু দ্য সেন্টার অব দ্য আর্থ’ লিখেছিলেন বলে মনে করেন অনেকে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণ এই সময়।
তবে আজকের বিজ্ঞানীদের মত, ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৩৭১ কিলোমিটার নিচে গেলে পৃথিবীর কেন্দ্রে সন্ধান মিলতে পারে।
সেই সঙ্গে কী পাওয়া যেতে পারে, তারও একটি ধারণা দিয়েছেন তারা। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে পেঁয়াজের মতো অনেকগুলো স্থর রয়েছে। এই স্তরগুলোর মধ্যে একমাত্র প্রথম স্তরে রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব। এই স্তরকে তারা নাম দিয়েছেন ভূ-ত্বক। প্রথম স্তরে যেমন প্রাচীন ভূগর্ভস্থ শহর যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে খনি।
জানা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বর্ণখনির শ্রমিকরা মাটির ২ কিলোমিটারের মধ্যে জীবন্ত কীটের সন্ধান পেয়েছিলেন। তবে এরপর এখন পর্যন্ত আর কোনও প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রথম স্তরের পর ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত রয়েছে আরেকটি স্তর। এই স্তরকে বলা হয় বিচ্ছুরিত স্তর। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্তর বলে মত তাদের।
পৃথিবীর আয়তনে প্রায় ৮২ শতাংশ জুড়ে বিস্তৃত এই স্তর। এখানে রেয়েছে উত্তপ্ত শিলা। রয়েছে একটি সাগর। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের সব সাগরের পানি ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে এই সাগরের। তবে, এই সাগরে কোনো পানি নেই। এই স্তর থেকে আরও গভীরে গেলে মিলবে নীল রঙের একটি ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেটের স্তর।
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার গভীরে পৌঁছানোর পর পৃথিবীর সবেচেয়ে শেষ স্তরে উপনীত হওয়া যায় বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, দুটি বিশালাকার কাঠামো রয়েছে এই স্তরে। এক একটা কাঠামোর উচ্চতা ২০৩টি এভারেস্ট পর্বতের উচ্চতার সমান।