
আমার কাগজ প্রতিবেদক
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পুলিশি বাধা অতিক্রম করে দেওয়াল টপকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন এবং অতিথিদের জন্য বরাদ্দ করা চেয়ারগুলোতে বসে পড়েন শতাধিক ‘জুলাই যোদ্ধা’। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণমুখী মঞ্চে বিকেল ৪টায় স্বাক্ষর হওয়ার কথা থাকলেও জুলাই যোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন দাবি জানানোর জন্য আগেই অবস্থান নেন। তারা জানান, জুলাই সনদে জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে, জুলাইয়ে শহীদ ও আহতদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে এবং সুরক্ষা আইনসহ দায়মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
২০২৪ সালের রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রীয় সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্যায়ে ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে ৪৪টি বৈঠকে ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টির বিষয়ে ঐক্য হয়। দ্বিতীয় দফায় সংবিধান সংশ্লিষ্ট ১৯টি মৌলিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়, যার ১০টিতে নোট অব ডিসেন্ট দেয়া হয়েছে।
জুলাই জাতীয় সনদে মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৪৭টি ‘সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে সংস্কার’ এবং বাকি ৩৭টি ‘আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৪০ পৃষ্ঠার সনদে এসব প্রস্তাব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
সনদে বলা হয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো কোনো প্রকার বিলম্ব ছাড়াই দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করবে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে কিছু দল, বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), খসড়া বাস্তবায়ন আদেশ প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় তারা সনদে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়েছে।