
আমার কাগজ প্রতিবেদক
বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধের সঙ্গে নৈকট্য ছাড়া দেশপ্রেমিক বাঙালি হওয়া যায় না বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ আয়োজিত ৭ম জাতীয় কাউন্সিলের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন উপাচার্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেকড় বুঝতে হলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে বুঝতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল বিজয়ী হয়েছেন সেটি আনন্দের হতে পারে। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকটে তার নীরবতা, স্মৃতিসৌধে ও শহীদ মিনারের সঙ্গে তার গভীর নৈকট্য না হওয়া, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান না নেওয়া আমাদের ব্যথিত করে। বরং তার নেতৃত্বে প্রান্তিক মানুষের যে শ্রম শোষণ হয়েছে সেটি কোনো বিবেচনায় অর্থনীতির অগ্রসরতার বিষয় নয়।
রোহিঙ্গা সংকটে ও আশ্রয়ে পশ্চিমা বিবৃতিদাতাদের ভূমিকা প্রত্যাশিত ছিল উল্লেখ করে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ দাতাগোষ্ঠীদের যদি একটি প্রশ্ন করি- আজ আপনারা একজনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু যেদিন লাখো শরণার্থী মিয়ানমারে বিপন্ন হয়েছিল, সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ১৬ কোটি মানুষকে যদি খাওয়াতে পারি তাহলে আর কিছু মানুষকে কি খাওয়ানো যাবে না? অবশ্যই যাবে। তারা দায়িত্ব নিলেন মানবতার। কিন্তু কোথায় ছিল সেদিন আপনাদের বিবৃতি, অনুভূতি? লাখো শরণার্থীর পাশে কেন দাঁড়ালেন না? শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহ আপনারা যুদ্ধ করছেন। আপনাদের কি দায়িত্ব ছিল না তাদের পাশে দাঁড়ানো? আমরা লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দিচ্ছি। আমি অনুরোধ করব, বাংলাদেশকে বাংলাদেশ হতে দিন। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের নির্যাতনের বিনিময়ে আমরা দেশ পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ব জনমতের ভয়ে যেই পাকিস্তান পিতাকে হত্যার দুঃসাহস করেনি। শুধু কী হত্যা? শুধু কী বঙ্গবন্ধুকে হারানো? সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে হারিয়েছিলাম আমরা। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া পবিত্র আমানত তার দুইটি কন্যা। বাংলাদেশে থাকলে তাদেরকেও হয়তো সেদিন হত্যা করা হতো। হত্যাকারীদের সেই বুলেট তাদেরকে আঘাত করতে পারেনি তারা সেদিন জার্মানিতে ছিলেন বলে। আমাদের ভাবতে হবে ক্ষতিগুলো কোথায় হয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রণীত চার মূলনীতিকে বাদ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, আর জিয়াউর রহমান প্রণীত সামরিক শাসন।’