আমার কাগজ প্রতিবেদক
বিএনপি-জামায়াতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘিরে রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীতে হরতালের প্রভাব তেমন একটা দেখা যায়নি। সকাল থেকেই রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে, ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাসের সংখ্যা কম ছিল। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় কাজে বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তবে, হরতালে কেউ যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকার ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য রাজধানীর মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রাজধানী ছাড়াও হরতালে সড়কে শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। কেউ যাতে কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগুন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে চাইলে ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, হরতালের নামে কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন ও সাধারণের যানচলাচলে ব্যাহত করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণের জানমাল এবং সরকারি সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান বাংলাদেশ পুলিশের আইনি দায়িত্ব। পুলিশ জনগণকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নাগরিকরা চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হলে বা আইনি সহায়তার প্রয়োজন হলে নিকটস্থ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এর আগে, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু করে বিএনপির। তবে, তার আগেই রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দেয়। কিন্তু সংঘর্ষটি বিস্তৃত হয়ে বিএনপির সমাবেশের কাছে চলে আসে এবং এক পর্যায়ে সমাবেশের কাছে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বিএনপির সমাবেশের মাইকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। পরে নয়াপল্টনের মঞ্চ থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে, হরতালে ঢাকা শহর, শহরতলী ও আন্তজেলা রুটে বাস-মিনিবাস চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
ভয়াবহ এই সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য ও এক রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। এরপর রাতেই জনসাধারণের নিরাপত্তায় রাজধানীতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
উল্লেখ্য, রাজধানীর নয়াপল্টনে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর একই দিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং শাপলা চত্বরে সমাবেশের ডাক দেয় জামায়াতে ইসলামী।