আমার কাগজ প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে হেফাজত কাণ্ডের তিন বছর পর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম ও দুই এমপিসহ ১২৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে হেফাজতে ইসলামের সোনারগাঁ শাখার সদস্য মাওলানা শাজাহান শিবলী।
গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সোনারগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারসহ ১২৮ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, ঢাকার মতিঝিল জোনের সাবেক এডিসি আতিকুল ইসলাম মুরাদ, সোনারগাঁও উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ ডিবির সাবেক ওসি মো. এনামুল কবির ও সোনারগাঁও থানার সাবেক ওসি মো. হাফিজুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় হেফাজতে ইসলামের সমর্থক শাহজাহান শিবলী উল্লেখ করেন, গত ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাতে কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক তার স্ত্রীসহ সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্ট হোটেলে অবকাশ যাপনের জন্য আসেন। ওই সময় দুই সাবেক সাংসদের ষড়যন্ত্রে পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এজাহার নামীয় আসামিরাসহ ১০০-১৫০ আসামি মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তা করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁওয়ের হেফাজত কর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তার জোরালো প্রতিবাদ করেন।
এসময় এজাহার নামীয় আসামিরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিল, ঘুষিসহ লোহার রড দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করে। ওই সময় পুলিশ তাকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে। অসুস্থ অবস্থায় তিনি ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টায় মারা যান।
তিনি এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, ওই সময় বিরূপ পরিস্থিতির কারণে মাওলানা ইকবাল হোসেনের পরিবার মামলা করতে সাহস পাননি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় তার পরিবারের পক্ষে মামলা দায়ের করেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, সোনারগাঁওয়ে হেফাজত ইসলামের নেতার ওপর হামলায় ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলবে।