
আমার কাগজ ডেস্ক
গত ২৯ জুন, ২০২৪ তারিখ আরটিভি অনলাইনে প্রকাশিত “মসজিদে মাইকিং করে লালনভক্ত বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ” শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, কুষ্টিয়ায় মসজিদে মাইকিং করে চায়না বেগম নামে লালনভক্ত এক ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরেরও শিকার হয়েছেন তিনি। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের এ ঘটনায় কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগে ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এনামুল হক, মাতব্বর মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখসহ ৪৫-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা চায়না বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেছেন। এমনকি রাতের আঁধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্তরা। চায়না বেগম জানান, তাঁর স্বামী আধ্যাত্মিক সাধক লালন সাঁইজির অনুসারী ছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন বলে ভেবেছিলেন তিনি। লালনভক্ত এ বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার স্বামী মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, কোথাও জায়গা নাহলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতিবছর বাতাসার সিন্নি হলেও করবা। তার কথা রাখতেই ঘরখানা তৈয়ার করি। কিন্তু এলাকার লোকজন আমাকে না জানিয়েই সব ভেঙে ফেলেছে।’ চায়না বেগমের বোন জামাই সাধু শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘আমাদের অপরাধটা কী? আমরা সাধু সমাজ কি নিজের জমিতেও আর থাকতে পারব না। আজকে সাধুর ঘর কেন ভাঙা হলো? সাধু সমাজকে কেন অপমান করা হলো? মসজিদে মাইকিং করে লোক জড়ো করে ঘর ভাঙা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, মসজিদে মাইকিং করে লালনভক্ত ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর এবং প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধাকে মারধর করার অভিযোগটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। সংবাদ প্রতিবেদন মতে, উক্ত ঘটনায় কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ অবস্থায়, উক্ত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতারের সর্বশেষ অগ্রগতি আগামী ৩০ জুলাই ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া-কে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি জ্ঞাতার্থে জেলা প্রশাসক ও সভাপতি, কুষ্টিয়া জেলা মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও সুরক্ষা কমিটি বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।