
ভোলা প্রতিনিধি
লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলের নদীগুলোতে পানি বেড়েছে। এতে গত পাঁচদিনে মেঘনার ভাঙনে ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জের খেজুর গাছিয়া এলাকায় প্রায় আড়াই শত মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) ও শনিবারের টানা বৃষ্টি এবং মেঘনায় জোয়ারের প্রবল চাপে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের প্রায় ২শ মিটার এলাকায় নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে উপজেলার হাজারীগঞ্জ এবং জাহানপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় বাঁধের বাকি অংশ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে। ক্ষতির মুখে পড়বে বসতভিটা, ক্ষেতের ফসল ও মাছের ঘের।
হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মাওলানা মুহাম্মদ ইছহাক ও মো. সিরাজ হাওলাদারসহ অনেকের অভিযোগ, প্রায় দুমাস আগে ঘুর্ণিঝড় ‘শক্তির’ প্রভাবে মেঘনার ভাঙনে মে মাসে বাঁধটির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দেখে যান। পরে বেকু দিয়ে অল্প কিছু মাটি ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ তখন বাঁধের কাজ ঠিকভাবে করা হলে, এখন বাঁধের এত বড় ক্ষতি হতো না।
এদিকে মেঘনার ভাঙনে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সেখানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, জিও ব্যাগের কাপড় দিয়ে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ সময় শ্রমিকরা জানান, নদীতে জোয়ার থাকায় কাজ করা যাচ্ছেনা। ভাটার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ চরফ্যাশন কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফা উদ্দৌলা ইত্তেফাক জানিয়েছেন, গত মে মাসে বাঁধটি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই কাজের জন্য দুটি প্যাকেজে (২৮+১৮) ৪৬ লাখ টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করতে হবে। বৃষ্টি কমলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে।
চরফ্যাশন ইউএনও রাসনা শারমিন মিথি বলেন, খেজুরগাছিয়া বাঁধে জিও রোল দিয়ে ভাঙা অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি কমলে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মাটি ভরাট করে তার সামনে ড্যাম ফেলে ভাঙন রোধ করা যাবে।