
আমার কাগজ প্রতিবেদক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নতুন করে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র কেনা বা লাইসেন্স নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। পাশাপাশি জমা দেওয়া অস্ত্রও আর ফেরত দেওয়া হবে না।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর অনেকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা বলে নতুন লাইসেন্সের আবেদন করলেও সেগুলো অনুমোদনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছর বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত জমা পড়া ১৩ হাজার ৩৪০টি অস্ত্রের মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়েছে মাত্র তিন হাজার। বাকি অস্ত্র ফেরত না দিয়ে এখনো পর্যালোচনায় রাখা হয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আপাতত জমা দেওয়া অস্ত্র আর ফেরত দেওয়া হবে না। বরং ফেরত দেওয়া অস্ত্রগুলোর কিছু নির্বাচনের আগে আবার জমা নেওয়া হতে পারে।
আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে (২০০৯–২০২৪) দেশে ১৭ হাজার ২০০টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে হত্যা মামলার আসামিরাও লাইসেন্স পেয়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দেওয়া সব লাইসেন্স স্থগিত করে এবং সংশ্লিষ্টদের অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
তবে তিন হাজার ৮৬০টি অস্ত্র জমা পড়েনি। এগুলো এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য হচ্ছে এবং সেগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে। সবচেয়ে বেশি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় (৭ হাজার ৫৫১টি)।
এদিকে বৈধ অস্ত্রের মধ্যে ৭৭৮টির লাইসেন্স ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। যেসব লাইসেন্স বাতিল হয়েছে, তার বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ীদের নামে ছিল। লাইসেন্সধারীদের অনেকে বিদেশে বা আত্মগোপনে চলে গেছেন, আবার কেউ কেউ দাবি করেছেন তাঁদের অস্ত্র লুট হয়ে গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে নতুন লাইসেন্স অনুমোদন করা হবে না। আর জমা দেওয়া অস্ত্র ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াও আপাতত স্থগিত থাকবে।